কুবির মেধাবী ছাত্র সাইদুরের দায়িত্ব নিলেন রেজিস্ট্রার

কুবি প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের এর উদ্যোগে পড়া লেখা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমানের পড়াশুনার দায়িত্ব নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।

জানা গেছে, সাইদুরের জন্ম কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরে। জন্ম থেকে সুস্থ ছেলেটি ৬ মাস বয়সে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে হারিয়ে ফেলে স্বাভাবিক জীবন। একে একে পায়ে ভর করে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পরে হাতের শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। তবুও পড়াশুনা ছেড়ে দেননি। উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ভর্তি হন সার্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে তিনি স্নাতক শেষ বর্ষে অধ্যায়ন করছেন। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও পরীক্ষা নিজ হাতে দিতে পারেনি। মুখের কথা শুনে একজন লেখার কাজটি সম্পন্ন করেন। এভাবে পড়াশুনা চালিয়ে ধরে রেখেছেন ১ম শ্রেণী।

পারিবারিক খরচেই চলছিল তাঁর লেখাপড়া। হঠাৎ বাবা মারা যাওয়ায় সাইদুরের স্বাভাবিক পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটে। একদিকে শারীরিক অক্ষমতা অপরদিকে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা সবমিলিয়ে সাইদুর তাঁর ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায়। সাইদুরের পরিবারের অবস্থা ও তার লেখাপড়ার আকাঙ্খা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তাকে ডেকে পাঠান। তাঁর খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা বলেন তিনি। এ কথা শুনে সাইদুরের চোখে আনন্দ অশ্রু চলে আসে। ‘আমি নিজ চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছি। আমার স্বপ্ন পূরণে স্যার আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজ পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও মানুষের মতো মানুষ হয়ে সবার পাশে দাঁড়াতে চাই।’ এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছিলো সাইদুর।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছি। তাই এ বিষয়টা বুঝতে পারি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যায় পড়ে। সাইদুর ছেলেটাও অনেক কষ্ট করে পড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। আমার একটু চেষ্টায় যদি সে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে পারে আমার নিজেকে স্বার্থক মনে হবে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার এর আগেও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এক ছাত্রীকে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এছাড়া তিনি আরো দুইজন শিক্ষার্থীর পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন।

আরো পড়ুন