কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার পরিত্যক্ত জমিতে ফসল ফলাচ্ছেন ওসি

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী যোগদান করেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এর কয়েক মাস পরেই দেশে শুরু হয় করোনার প্রাদুর্ভাব। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নির্দেশনা দেন অনাবাদি জমিকে চাষাবাদের জন্য। সে সময় নাঙ্গলকোট থানার ওসি বখতিয়ারও উদ্যোগ দেন চাষাবাদের।

জানা গেছে, ওসি বখতিয়ার চাষাবাদের জন্য বেছে নেন তার থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে থাকা একটি জমিকে। পরে উদ্যোগ নিয়ে লতা-পাতায় ভরা ১২০ শতকের ওই জমিটি পরিষ্কার করান তিনি। এরপর পুলিশ সদস্যদের নিয়ে শুরু করেন শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ। প্রথমে কয়েক দফা বীজবপন করা হলেও অতিবৃষ্টিসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফসল পাননি তিনি। কিন্তু হাল না ছেড়ে চেষ্টা চালিয়ে যান। এরপর সফল হন তারা। বর্তমানে ওই পরিত্যক্ত জমিতে শাক-সবজিতে ভরপুর। এসব শাক-সবজি দিয়ে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের চাহিদা মিটছে। পাশাপাশি দিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ স্থানীয়দের। অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ওসি নিজেও ক্ষেত পরিচর্যা করছেন নিয়মিত। আর এসব সবজি উৎপাদিত হচ্ছে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত উপায়ে।

ওই পরিত্যক্ত জমিতে এখন লাউ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, পালংশাক, লালশাক, পেঁয়াজ, মরিচ, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, শালগম, মুলা, ধনেপাতাসহ অন্তত ২০ প্রকার শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই মাঠে ফসলের পরিচর্যা করছেন ওসি বখতিয়ার। ফসলের মাঠের বিভিন্ন দিকে লাগানো হয়েছে ফলের গাছও। থানার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের দুই পাশে লাগানো হয়ে বাহারি রঙের ফুল গাছ। থানায় আসা সেবা প্রত্যাশীরা এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। পাশাপাশি পুলিশের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনাকালীন সময়ে নির্দেশনা দিয়েছেন কোনো জায়গা পরিত্যক্ত থাকতে পারবে না। এরপর চিন্তা করলাম আমাদেরও কিছু করা দরকার। সেই চিন্তা থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথমে ওই জমি থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে লতা-পাতা-জঙ্গল পরিষ্কার করেছি। এরপর শুরু করি চাষাবাদ। প্রথমে ফলন না হলেও এখন শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা এখন বিষমুক্ত শাক-সবজি খেতে পারছেন। পাশাপাশি থানায় আসা অনেকেই এখান থেকে সবজি নিচ্ছেন। আমি আশা করছি এই চাষাবাদ অব্যাহত থাকবে।

আরো পড়ুন