কুমিল্লায় আবারো ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর সিটি হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় ফাতেমা বেগম (২৭) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের স্বামী দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালী গ্রামের নজরুল সর্দার মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

তিনি জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর দাউদকান্দির মালিগাঁও ৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ফারজানা আক্তারের গৌরীপুর সরকারি হাসপাতাল কোয়ার্টারে তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়ে গেলে রোগীর অবস্থা ভালো নয় বলে চিকিৎসক জানান। তাকে দ্রুত গৌরীপুর সিটি হসপিাটালে নিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের কথা বলেন। সিটি হসপিাটালে বিকাল ৩ টায় ডাঃ ফারজানা আক্তার নিজেই সিজার করেন। সেখানে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন ফাতেমা বেগম। অপারেশনের পর রাত ৮টায় রোগী অবস্থা ভালো নয় বলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। রোগীর পরিবার প্রথমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল পরে ঢাকা গ্রীণ রোড ইউনিহেলথ্ স্পেশালাইজ হাসপাতালে চিকিৎসা করান। ইউনিহেলথ্ হাসপাতালে টানা কয়েক দিন আইসিওতে থাকার পর সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় ফাতেমা বেগম মারা যায়।

তিনি বলেন,ডাঃ ফারজানা আক্তার তাকে আতঙ্কিত করে সিটি হসপিটালে নিতে বাধ্য করে। একজন সরকারি ডাক্তার হয়ে তিনি কেন বেসরকারি হাসপাতালে তার স্ত্রীকে নিয়ে গেলেন? ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জালাল হোসেনকে গিয়ে অবগত করে এসেছি। হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। নজরুল সর্দার জানান, ফরহাদ (১০) ও নাজমুল (৭) নামের দুটি ছেলে রয়েছে তার। সে নিজেও প্রতিবন্ধী। গ্রামে ছোট একটি দোকান চালিয়ে কোন রকমে সংসার চলে তার। তার দুই ছেলের স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে, কিন্তু এখন কেন তার স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হলো?

এ ব্যাপারে ডাঃ ফারজানা আক্তার মুঠোফোনে জানান, রোগীর পরিবারের অভিযোগ সঠিক নয়। কোন ভুল চিকিৎসার প্রশ্নই উঠে না। রোগীর পেসার কমে গেলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। রোগীকে সম্পূর্ণ সঠিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। তদের অভিযোগের কোন যুক্তিকতা নেই। রোগীর মৃত্যু কোন চিকিৎসকের কাম্য নয়।

গৌরীপুর সিটি হসপিাটলের মালিক মোঃ পারভেজ ভূঁইয়া জানান, ফাতেমা বেগমের সিজার করার কয়েক ঘণ্টা পর রোগীর পেসার কমে গেলে তাকে দ্রুত ঢাকায় পাঠানো হয়। রোগীর চিকিৎসা সেবায় কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে তাকে। রোগীর স্বজনের আনীত অভিযোগ সঠিক নয়।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জালাল হোসেন জানান, কয়েকদিন পূর্বে ফাতেমা বেগমের স্বামী নজরুল সর্দার আমার অফিসে এসে সিটি হসপিটাল ও ডাঃ ফারজানা আক্তারের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ করে গিয়েছেন। মঙ্গলবার মুঠোফোনে তিনি জানিয়েছেন তার স্ত্রী ঢাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার অভিযোগ তদন্ত করে দেখে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, রোগীর পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে হসপিাটাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

আরো পড়ুন