কুমিল্লায় আবাসিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকায় অটো রাইছ মিলে’র অনুমোদন, হুমকীর মুখে পরিবেশ

কুমিল্লা-মীরপুর সড়কের বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের গাজীপুর মৌজাস্থিত খাড়াতাইয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ও মর্ডান ইসলামিয়া স্কুল এন্ড টেকনিক্যাল কলেজের পাশে জনবহুল আবাসিক এলাকায় স্থাপিত হচ্ছে মেসার্স জাহানারা অটো রাইছ মেইল নামে একটি কারখানা। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে কারখানা নির্মান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে আবাসিক এলাকা ও একশত গজের মধ্যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার পরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য ১ শত ২৭ জন গ্রামবাসীর স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্র বিভিন্ন দপ্তরে জমা পরেছে।

অভিযোগ পত্র ও কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছরের জানুয়ারী মাসে বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া গাজীপুর গ্রামের মোঃ আবদুল মান্নান ওরফে মোনাফ মেম্বারের ছেলে বুড়িচং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন মেসার্স জাহানারা অটো রাইছমিল স্থাপনের লক্ষে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরে একটি ছাড়পত্রের আবেদন জমা দেয়। আবেদনের এক মাসের মধ্যে পাশর্^বর্তী লোকজনের সাথে কথা না বলেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

জুন মাসের প্রথম দিকে স্থাপনা নির্মাণের কাজ আরাম্ভ করলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজড়ে আসে। মিলটি অন্যত্র স্থাপন করার জন্য প্রথমে গ্রামবাসী মিল মালিকের বরাবরে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানান। মিল মালিক বিষয়টি কর্নপাত না কারায় গ্রামবাসীর পক্ষে মিল সংলগ্ন বাড়ীর হাজী সুরুজ মিয়া খন্দকারের ছেলে মোঃ জাকির হোসেন খন্দকার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর মধ্যে কুমিল্লা- ৫ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, পরিবেশ ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের সচিব, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা অফিসার ইনচার্জ ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করেন।

অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান, মিলটির ছাড়পত্রের জন্য আবেদনের পর ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম ইসলাম তদন্ত করে রিপোর্ট জামা দেয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে ছাড়পত্র দেয়া হয়। পরবর্তীতে অভিযোগ আসার পর আমি নিজে পরিদর্শন করে বুঝতে পারি, প্রথম রিপোর্টে কিছু ভূল ছিলো। তাই আমি পুনরায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে নতুন করে সংশোধিত রিপোর্ট পেশ করেছি।

জনবহুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় কখনো শিল্প কারখানার ছাড়পত্র দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের দুটি অনুলিপি পেয়েছি। বিষটি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিদা আক্তার জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে মিল এলাকাটি পরিদর্শন পূর্বক রিপোর্ট প্রদান করা হবে।

এদিকে মিলটি অন্যত্র স্থানান্তর না করা হলে মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী করবেন বলে জানান এলাকাবাসী।

আরো পড়ুন