কুমিল্লায় দারিদ্রতাও হার মানাতে পারেনি দুই ভাইকে

আকবর হোসেনঃ কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যায় আরিফ ও শরীফ দুই ভাই। বাবা বিল্লাল হোসেন একজন সিএনজি অটো চালক। অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছেন তিনি। কষ্টের উপার্জিত টাকার বেশির ভাগ ব্যয় করেছেন ছেলেদের লেখাপড়ার পেছনে। তার স্বপ্ন ছেলেরা মানুষের মতো মানুষ হবে, ভালো ফলাফল অর্জন করবে। দারিদ্রতার কাছেও হার মানেনি আরিফ ও শরীফ।

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় তারা দুই ভাই মনোহরগঞ্জ উপজেলার মান্দারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। কঠোর পরিশ্রম ও কষ্টের কারণে তাদের এই সফলতা। দুজনেই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তাদের বাড়ি উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামে। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব অনেক বেশি । কিন্তু এই দুই ভাই পায়ে হেঁটে স্কুলে আসা যাওয়া করতো। তাদের পিতা-মাতা ছেলেদের লেখাপড়ার বিষয়ে সবসময় সচেতন থাকতেন। শত প্রতিকূলতাও তাদেরকে দমিয়ে রাখেনি। মা- বাবার কষ্ট আজ স্বার্থক হয়েছে। শিক্ষকদের আন্তরিকতায় ও সহযোগিতায় আজ আরিফ ও শরীফের এই সফলতা।

আরিফ ও শরীফ দুই ভাই আশিয়াদারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শেষ করে। আরিফ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও ট্যালেন্টপুল বৃত্তি অর্জন করে। এছাড়াও সে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে। আরিফ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বেশ কয়েকটি সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। শরীফ একই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এ গ্রেড অর্জন করে। অন্যদিকে সে জেএসসি পরীক্ষায়ও এ গ্রেড অর্জন করে।

আরিফ ও শরীফের বাবা বিল্লাল হোসেন আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আজকে আমার কাছে খুবই ভাল লাগছে,আজকে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি, আমার দুটি সন্তান এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। আমার কষ্ট স্বার্থক হয়েছে। আরিফের মা নাসরিন আক্তার জানান, আমার দুই ছেলেকে লেখাপড়া করানোর জন্য আমরা অনেক কষ্ট করেছি। আজকে আমার দুই ছেলে জিপিএ-৫ অর্জন করায় তাদের নিয়ে আমরা গর্বিত।

আরিফরা চার ভাইবোন। তার মধ্যে আরিফ ও শরীফ দুই ভাই এবং তাদের আরেক ভাই হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়ে, ছোট বোনটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আরিফের স্বপ্ন সে একজন ডাক্তার হবে । অন্যদিকে শরীফের স্বপ্ন সে একজন ইঞ্জিনিয়ার হবে। তারা সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।

আরো পড়ুন