কুমিল্লায় দুই মহাসড়কে তিন চাকার যান চলছেই

ডেস্ক রিপোর্টঃ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন অংশে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার শত শত যান। এ কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণ ঝরে মানুষের। তা ছাড়া যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, সুশাসন নিশ্চিত না হওয়ার কারণে মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা চলছে। আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে হলে মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চলবে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ জুলাই রাজধানীতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সড়ক তদারক কমিটির এক পর্যালোচনা সভায় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (তিন চাকার বাহন) চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর দেশের ২২টি মহাসড়কে অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা জেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক দুটি রয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই দুই মহাসড়কের মধ্যে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অটোরিকশা সব সময়ই চলে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে অটোরিকশা। কোথাও কোথাও এক পাশ থেকে আরেক পাশে পার হচ্ছে তিন চাকার বাহন। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নন্দনপুর, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের উত্তর রামপুর ইউটার্ন, সদর দক্ষিণ উপজেলা ফটক, সুয়াগাজী ও চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এলাকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা পার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুয়াগাজী এলাকা দিয়ে চলে অটোরিকশা। এর মধ্যে তিন বছর আগে সদর দক্ষিণ উপজেলা কমপ্লেক্স ফটকে সড়ক দুর্ঘটনায় মহাসড়ক পার হতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়।

সরেজমিনে গত শুক্রবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় উল্টো পথে নছিমন চলতে দেখা গেছে। চান্দিনা, রায়পুর এলাকায়ও তিন চাকার বাহন চলছে। কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের দেবীদ্বার, দেবপুর, কংশনগর, কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় তিন চাকার বাহন চলতে দেখা গেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নন্দনপুর এলাকা দিয়ে কেবল ক্রসিং পার হওয়ার জন্য কুমিল্লা জেলা ও পুলিশ প্রশাসন অটোরিকশা চলাচলের অনুমোদন দেয়। এই মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার ১০৪ কিলোমিটারের মধ্যে এখান দিয়েই অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। কোনো ধরনের গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের সুবিধার্থে এই অনুমোদন মেলে। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী যখনই এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন তার আগে–পরে এখান দিয়ে অটোরিকশা পারাপার বন্ধ থাকে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ বলেন, তিন চাকার বাহনের কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এই মহাসড়ক দুটিতে অটোরিকশা চলাচল একেবারেই নিষেধ। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা তিন চাকার বাহন জব্দ করছি। চান্দিনায় মহাসড়কের পাশে তিন চাকার বাহনের স্তূপ করা হয়েছে।’

বিআরটিএ কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আবু আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, ‘কুমিল্লা জেলায় বৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ১২ হাজারের মতো। লাইসেন্সবিহীন আছে আরও অন্তত ১০ হাজার। আমরা বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে থাকি। তখন হাইওয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে থাকে। এরপরও ফাঁকে ফাঁকে অটোরিকশা চলে।’

সূত্রঃ প্রথম আলো

আরো পড়ুন