কুমিল্লায় পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মো: খোকন খান ও মাসুম রানা প্রধান নামের দুই ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে গুরতর আহত করা হয়েছে। তারা দুজনেই কুমিল্লা নগরীর ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার ব্যবসায়ী। আহত দুজনেই নগরীর মুন স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দুজনের মধ্যে খোকন খানের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তার পিঠে ও বুকে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ফুসফুস ছিদ্র হয়ে যাওয়াতে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। জানা যায়, খোকন খান পশ্চিম বাগিচাগাঁও মুন্সী তোরাব আলী সড়কের বাসিন্দা এবং ইস্টার্ন প্লাজার পুরানো ব্যবসায়ী। মার্কেটের নিচ তলার জুলি ফ্রেব্রিক্সের মালিক। তিন বছর আগে শহরতলীর চম্পকনগর সাতরা এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন বাকিতে থ্রিপিছ কিনেছিলেন খোকন খানের কাছ থেকে। তখন থেকে আবুলের কাছে ১৪০০ টাকা পেতেন ব্যবসায়ী খোকন খান। দীর্ঘদিন ধরে দিবো-দিচ্ছি করে ঘুরাচ্ছিলেন আবুল। এরই মধ্যে আবুল নগরীর বাদশা মিয়ার বাজার মোড়ের ষোলআনা নামের একটি দোকানে সেলসম্যানের চাকরী নিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার খোকন খানের ভাগিনা ইস্টার্ন প্লাজার জুলি টেইলার্সের মালিক মাসুম রানা প্রধান আবুলের কাছে টাকা চাইতে যান মাসুম রানা প্রধান। এসময় আবুল হোসেন মাসুমকে গালাগালি, মারার জন্য উদ্যত হওয়ার পাশাপাশি জিহবা কেটে নেয়ার হুমকি-ধমকি দেন। মাসুম ফিরে এসে খোকন খানকে বিষয়টি জানানোর পর, খোকন খান শুক্রবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাদশা মিয়ার বাজারে গিয়ে সোলআনার মালিক মোসলেম মিয়াকে বিষয়টি জানান এবং এমন আচরন করাটা ঠিক হয়েছে কিনা আবুল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করেন। আবুল হোসেন দোকান থেকে বের হয়েই তার ছেলে ইমন কে ফোন করেন। ইমন সহ আরো সাত আটজন এসেই ব্যবসায়ী খোকন খান ও মাসুম রানা প্রধানের উপর ঝাপিয়ে পরেন এবং একের পর এক ছুরিকাঘাত করেন। খোকন খান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আবুল হোসেন সহ হামলাকারীরা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ইস্টার্ন প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম সহ আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা তাদের উদ্ধার করে মুন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ব্যবসায়ী খোকন খান বলেন, আমি আবুল হোসেনের কাছে ১৪০০ টাকা পাই। ভাগিনাকে টাকা চাওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলাম। সে তাকে মারার হুমকি দিয়েছে, গালাগালি করেছে, জিহবা কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছে। কথাগুলো শুনে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সে হামলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কিছুতেই বুঝতে পারিনি। আমরা দুজন যাওয়ার সাথে সাথে সে হামলা চালায়।

ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম ভূইয়া বলেন, হামলার খবর পেয়ে আমি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ছুটে গিয়ে খোকন খান , মাসুম রানা প্রধানকে উদ্ধার করে মুন হাসপাতালে নিয়ে যাই। পাওনা টাকা চাইতে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই এই হামলা হয়েছে। আমারা মার্কেটের ব্যবসায়ী হিসেবে এই জঘন্য হামলার বিচার চাই।

এদিকে, ঘটনার পর রাতেই আহত দুজনকে হাসপাতালে দেখতে ছুটে যান কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো: আনোয়ারুল হক। এসময় তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। এ ঘটনায় মাসুম প্রধানের ভাই মাসুদ প্রধান বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

আরো পড়ুন