কুমিল্লায় প্রবাসীকে অপহরণের পর ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, ভিডিও ভাইরাল

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় ইয়াসিন আহাম্মেদ সোহাগ নামে এক প্রবাসীকে অপহরণের পর ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করেছে অপহরণকারী চক্র। গত ১২ সেপ্টেম্বর অপহরনের পর টানা ৬দিন নির্যাতন করে ১৮ সেপ্টেম্বর ওই প্রবাসীকে লোমহর্ষক নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সিনেমার কাহিনীকে হার মানিয়েছে এ অপহরণ এবং নির্যাতনের ঘটনাটি। প্রবাসী সোহাগকে অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে এলাকায় ব্যপক তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে। সোহাগ(৩০)জেলার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার পোমকাড়া গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় অপহৃতের ভাই সুজন মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলেও ঘটনার মুল হোতা সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযোগে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার পোমকাড়া গ্রামের ইয়াসিন আহাম্মেদ সোহাগ ২০১২ সালে ইটালী যাওয়ার জন্য একই এলাকার লারোচো গ্রামের মালেক মাস্টার এবং তার ছেলে ইটালী প্রবাসী কামাল হোসেনকে ৭ লাখ ৩০ হাজার প্রদান করে। ওই মাস্টারের ছেলে তাকে ইটালী নিতে না পারায় সে এলাকার লোকজনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে ৬লাখ টাকা উদ্ধার করে সৌদি আরবে চলে যায়। পরে কামাল ইটালী থেকে ফ্রান্সে গিয়ে সৌদি প্রবাসী সোহাগের সাথে যোগাযোগ করে তাকে ফ্রান্সে নেয়ার প্রলোভন দেখায়। সোহাগ ফ্রান্স যাওয়ার জন্য ফের তাকে ১৩ লাখ টাকা প্রদান করে। কিন্ত তাকে ফ্রান্স নিতে গড়িমসি করায় সোহাগ পুনরায় তার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুসারে কৌশলে সোহাগকে গত ৭ সেপ্টেম্বর সৌদি থেকে দেশে আনে। পরে ১২ সেপ্টেম্বর ভিসা প্রদানের কথা বলে ঢাকায় নিয়ে কামালের বন্ধু সুমনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে একটি বাসায় রেখে লোমহর্ষক নির্যাতন চালায়। এ নির্যাতনের ভিডিও ইমোতে সোহাগের মায়ের কাছে প্রেরন করা হয় এবং ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায় অপহরনকারীরা সুমনকে হাত পা বেঁধে মুখে কচটেপ লাগিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে সিগারেটের ছেকা দেয় এবং ব্লেড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে। তার বুকে এবং গলায় চাপা দিয়ে নির্যাতন করে। এ নিয়ে সোহাগের ভাই সুজন ব্রাহ্মনপাড়া থানা এবং পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ ভিডিও চিত্রের সুত্র ধরে অপহরনকারী চক্রের প্রধান চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামের সুমনের ভাই মমিন এবং তার শশুর আবুল বাশার মুন্সিকে আটকের পর চাপ প্রয়োগ করা হয়। এতে অপহৃত ওই প্রবাসীর পকেটে ইয়াবা দিয়ে ৯৯৯ কল করে দেয় অপহরনকারীরা। রাজধানীর শ্যামপুর থানা পুলিশ তাকে গুরতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা ব্রাহ্মনপাড়া থানা পুলিশকে নিয়ে তাকে উদ্ধার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় মালেক মাস্টার এবং তার ছেলে জামাল হোসেনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে প্রবাসী সোহাগকে উদ্ধারের বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে অবহিত করে।

আরো পড়ুন