কুমিল্লায় বাড়ছে রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যার ঘটনা

কুমিল্লায় একের পর এক ঘটছে রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। গত কয়েক বছরের মধ্যে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশিরভাগের নেপথ্যে রয়েছে দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জেলার বরুড়ায় জহিরুল ইসলাম জহির (৩৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সচেতন মহলের দাবি,অধিকাংশ মামলার আসামি গ্রেফতার হয় না। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এসব হত্যাকাণ্ড বেড়ে চলেছে। একই গ্রুপ জড়িত একাধিক খুনে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় খুন হন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম প্রধান। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়ির কাছাকাছি শামবক্সি (ভল্লবপুর) এলাকায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক দেলোয়ার হোসেনকে আধিপত্যের দ্বন্দ্বে মাথায় গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলতি বছরের গত ১০ জুলাই নগরীর কোটবাড়ি সড়কের চাঙ্গিনি মোড় এলাকায় কুসিকের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ কর্মী আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় আলমগীরকে বহিষ্কার করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ। গত ১১ নভেম্বর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নগরীর চৌয়ারায় যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী ওরফে গোলাম জিলানীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ বরুড়া উপজেলার জীবনপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে চলা বিরোধ মেটাতে গিয়ে খুন হন বরুড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের জহিরুল ইসলাম জহির।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, বিচারহীনতার কারণে একের পর এক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। অনেক সময় বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নিহতের পরিবারের সদস্যরাও হতাশ হয়ে বিচারের আশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের এসব হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। না হয় এসব ঘটনা বেড়ে যাবে।

এবিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো.আজিম-উল-আহসান বলেন, চলতি বছরে কুমিল্লায় যে কয়টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে আমরা প্রায় সবগুলোই রহস্য বের করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা প্রতিটি হত্যার ঘটনায় জড়িতদের হত্যাকারী হিসেবেই দেখি। রাজনৈতিক পরিচয়ে কেউ পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

আরো পড়ুন