কুমিল্লায় মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার ডাক দেওয়ার জের ধরে খুন হয় প্রবাসী শহীদ,বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ডেস্ক রির্পোট ঃ সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার ডাক দেওয়ার জের ধরে খুন হয় কুমিল্লা সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জোড়া মেহের গ্রামে প্রবাসী শহীদুল ইসলাম। হত্যার ঘটনায় আটজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে মানবন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জোড়া মেহের গ্রামের মৃত মমতাজ মিয়ার পুত্র শহীদুল ইসলাম প্রায় দুই যুগ ধরে সৌদি প্রবাসী ছিলেন। বছর খানে আগে সে সর্বশেষ দেশের আসার পর আর বিদেশ যাননি। নিজের বাড়িতে গরুর খামার ও কৃষি জমিজামা দেখা শুনা করতেন। পাশাপাশি তিনি সমাজে শালিস দরবার করতেন। সম্প্রতি তিনি স্থানীয় জোড়া মেহের বায়তুল আমান জামে মসজিদের সেক্রেটারী কাম ক্যাশিয়ার নির্বাচিত হন। কিন্তু এ দায়িত্ব নিতে আগ্রহি ছিলেন পাশ্ববর্তী বাড়ির মৃত কমর আলীর পুত্র মাহাবুব (৪২)। এ নিয়ে মাহবুবের সাথে নতুন করে দ্বন্ধের সুত্রপাত হয়। এছাড়া সীমান্তবর্তী জোড়া মেহের গ্রামে মাদক ভয়াবহ আকার ধারণ করায় শহিদুল ইসলাম গ্রামের মুরুব্বীদের নিয়ে মাদক মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার ডাক দেন। মাহবুব ও তার কয়েক ভাই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। এতে ওই পরিবারের লোকজন ক্ষুব্দ হয়। এছাড়াও মাহবুব ও তার ভাই তারেক ওরফে আলেক অপর প্রবাসী ভাই ইকবালের স্ত্রী রানু বেগমের উপর পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নির্যাতন চালালোর ঘটনায় শাসিল বৈঠকে শহিদুল ইসলাম সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। শহিদুল ইসলাম সমাজে মাহবুরের পরিবারের মাদক ব্যবসা ও অন্যায় কাজের হুমকী হয়ে দাঁড়নোর কারণে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিয়ে এশার নামাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মসজিদে যাওয়ার সময় কয়েক গজ দূরে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা গাজী রিপন,মাহাবুব, আলেক ও তাঁর ভাইয়েরা মিলে শহীদকে গতিরোধ করে দারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারী কুপিয়ে হত্যা করেন লাশ গুম করার চেষ্টা চালায়। শোরগুল শুনে স্থানীয় এগিয়ে এলে খুনিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা শহিদুল ইসলামকে উদ্বার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপালে নিয়ে এলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন।
এ খুনের ঘটনার নিহতের কণ্যা উম্মে সালমা নার্গিস বাদি হয়ে প্রতিবেশী করম আলী পুত্র গাজী রিপন,মাহাবুর, স্বপন ,তারিকুর রহমান ওরফে আলেক,মমিন সহ ওই পরিবারের ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালী মডেল থানায় গত বুধবার মামলা দায়ের করেন।

কোতয়ালী মডেল থানার এসআই আবদুল হান্নান জানান, আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে প্রবাসী শহিদুল ইসলামের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার আমজাদ হোসেন,সাদেকুর রহমান সর্দার,শফিকুর রহমান সর্দার, কাজী আহসান, সাবেক সেনা সদস্য আবুল কাশেম, নিহতের ভাই দেলোয়ার হোসেন ও নিহতের কণ্যা উম্মে সালমা নার্গিস প্রমুখ।

আরো পড়ুন