কুমিল্লায় শিক্ষকের ধর্ষণে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্ত:সত্ত্বা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কোচিং সেন্টারে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। একাধিকবার ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম তারেকুর রহমান তারেক। তিনি উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত রেজাউর রহমান চৌধুরীর ছেলে।

এদিকে, এ ঘটনায় ওই কিশোরী ছাত্রীর বাবা গত রোববার (৪ অক্টোবর) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ নম্বর আদালতে অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পরে ওই আদালতের বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম শুনানির পর মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানাকে সরাসরি এফআইআর করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন এবং আসামীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিশাত সালাউদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষক তারেক সম্পর্কে ওই ছাত্রীর খালাতো ভাই। তারেক বিভিন্ন সময় তার কোচিং সেন্টার ছুটির পর পড়ার নাম করে ওই ছাত্রীকে থাকতে বলে। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করতেন তিনি। ধর্ষণের সময় ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন তারেক। পরে এসব ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন তিনি। ধর্ষণের ফলে ওই ছাত্রী গত ২৮ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ফেনী জেলা সদরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হলে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার রিপোর্ট আসে।

নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ধর্ষণের ঘটনার বিচার চাইলে এনিয়ে গত ৩০ এপ্রিল সালিশ বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আমার মেয়েকে বিয়ে করবে ধর্ষক তারেক। তখন তারেক সালিশদারদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে বলেন বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার পর সে বিয়ে করবে। এরই মধ্যে সে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এরই মধ্যে গত ১২ আগস্ট ওই ছাত্রী একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে। পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর এনিয়ে আবারও সালিশ বৈঠক বসলে ধর্ষক ও তার স্বজনরা বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান। পরে রোববার (৪ অক্টোবর) ভুক্তভোগীর বাবা আদালতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, তারা থানায় কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। শুনেছি এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। তবে মামলার কাগজপত্র আমরা এখনো হাতে পাইনি। মামলার কপি হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন