কুমিল্লায় শিশুকে ধর্ষণ, ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো মাতব্বররা

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার মুরাদনগরে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করেছে স্থানীয় এক মাতব্বর। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমান (৬৫) এবং ধর্ষিতা(১১) ওই গ্রামের বাসিন্দা।

গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় মাতব্বররা তা ধামাচাপা দিয়ে রাখেন। বুধবার ওই শিশুকে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে এলাকায় বেশ তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ মাতব্বররা ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভাগবাটোয়ারা করেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ওই টাকা থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে দেয়া হয়নি এক টাকাও।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গ্রামের মৃত জুলহাস মিয়ার মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুকে (১১) নানা ছলে, কৌশলে এবং ২০ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলে নিয়ে যান গ্রামের মাতব্বর লম্পট ছিদ্দিকুর রহমান। সেখানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। তবে কে বা কারা ঘটনাটি দেখে অজ্ঞাত স্থান থেকে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। এ ভিডিও দেখিয়ে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের যোগশাজশে গ্রামের মাতব্বররা ছিদ্দিকুর রহমানের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ষণের এ ভিডিও বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে এ ভিডিও দেখে ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমান গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মিজানুর রহমান এবং এসআই নুরুল আলম ওই গ্রামে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় এনে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় ধর্ষিতার মা মাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ধর্ষিতার ভাই জলিল মিয়া বলেন, “ঘটনার পর মাতব্বররা আমাদের কিছু টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তা গ্রহণ করিনি। আমরা ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।”

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “ধর্ষকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে সুনির্দিস্ট কোনো অভিযোগ কিংবা তথ্য প্রমাণ পাইনি, মাতব্বররা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্ত খবর পেয়ে অভিযোগ ছাড়াই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় এনে অভিযোগ গ্রহণ করেছি। ভিকটিমকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হবে।”

তিনি বলেন, “কোন মাতব্বর এর সাথে জড়িত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, লম্পট ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

আরো পড়ুন