কুমিল্লায় সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহ!

মো.জাকির হোসেনঃ পরীক্ষা শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার পর দেখা যায় হলের শিক্ষার্থীদের সামনে প্রশ্নোত্তর। দেখে দেখেই লিখছে তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর বাইরে থেকে হাতে লেখা প্রশ্নোত্তর সমাধান দিয়ে যায় অভিভাবকসহ কেন্দ্রে আসা স্বজনরা।

রোববার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়, অসদুপায়ে শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সমাপনী পরীক্ষা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সব পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। রোববার উপজেলার বরধুশিয়া কেন্দ্রে গিয়ে দেখ যায়, শিক্ষার্থীরা গণিত পরীক্ষা দিচ্ছে। কেন্দ্রের প্রবেশমুখে অভিভাবকদের ভিড় জমে আছে। কেন্দ্রে প্রবেশ করে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের ভয়াবহ নকলের চিত্র।

কেন্দ্রের ২নং কক্ষে প্রবেশ করে দেখা যায়, তিন-চারজন শিক্ষার্থী একত্র হয়ে হাতের লেখা একটি উত্তরপত্র দেখে পরীক্ষার খাতায় লিখছে। পাশেই দাঁড়িয়ে আছে দায়িত্বরত শিক্ষক। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উত্তরপত্রটি কে দিয়েছে জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী জানায়, পাশের এক ছাত্রী লেখা শেষ করে তাকে দিয়েছে।

এ রকম চিত্র পুরো পরীক্ষা হলের প্রতিটি কক্ষেই। এ বিষয়ে পরীক্ষা হলের দায়িত্বে থাকা রানীগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত খাতা দেওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলাম, বিষয়টি আমি খেয়াল করিনি। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর সব প্রশ্নের উত্তরপত্র কীভাবে এল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জানালা কিংবা বেড়ার ফাঁক দিয়ে কেউ দিয়ে যেতে পারে। আবদুল মতিন ছাড়াও এ কক্ষে আরও দুজন শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন। একজন বারানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার ও অন্যজন মকিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলী হোসাইন। হল সুপার নাহিদা বেগম শশীদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও সহকারী হল সুপার মো. ইসরাফিল বেগম ইয়াকুবুন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

দায়িত্বরত কেন্দ্র সচিব বড়ধুশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, এই কেন্দ্রে সর্বমোট ৩৩৮ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে তিন শিক্ষক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের হাতে উত্তরপত্র থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম মুন্সি বলেন, কোমলমতি শিশুদের হাতে নকল তুলে দেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।

আরো পড়ুন