কুমিল্লায় স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় কথিত সাংবাদিক ইমরান গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লায় স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় সাংবাদিক ইমরান ওরফে মন্টুকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালি থানা পুলিশ। বুধবার রাত একটায় তাকে কুমিল্লার দুর্গাপুর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে মামলা দায়ের করার পর থেকে পলাতক ছিল ইমরান ওরফে মন্টু। উল্লেখ্য যৌতুকের টাকা না দেয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন আর কণ্যাকে ঘরে না নেয়ার অনীহা জানালে স্ত্রী সুলতানা আক্তার রিনা (২৯) বাদী হয়ে কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার কোতয়ালি থানার কাপ্তানবাজার মোহন ডাক্তার বাড়ির আঃ খালেক এর ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে মন্টু (৩৪) এর সাথে ছোটরা দক্ষিণ পাড়ার কবির হোসেন এর মেয়ে সুলতানা আক্তার রীনার(২৯) বিয়ে হয় ২০০৫ সালের ১৭ এপ্রিল। বিয়ের পর তাদের সংসারে এনি নামের এক কণ্যাশিশু জন্মগ্রহণ করে। এনির বয়স বর্তমানে ৮ বছর। এনিকে নিয়ে ইমরান আর সুলতানার সংসার কিছুদিন ভালো কাটলেও অচিরেই ভাটা নেমে আসে তাদের দাম্পত্যে। ইমরান সুলতানাকে মোটরসাইকেল কেনার জন্য ১লাখ টাকার আনার জন্য প্রায়ই চাপ দিতে থাকে। সুলতানা তার বাবা মাকে বলে ১ লাখ টাকা এনে দিলে ইমরান তার বন্ধু বান্ধবের সাথে ঘুরে ফিরে সেই টাকা নষ্ট করে। টাকা শেষ হবার পর ইমরান পুনরায় সুলতানাকে আরো ১ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। এবার সুলতানা টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে ইমরান সুলতানার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের কণ্যা এনিকেসহ সুলতানাকে তার বাবার বাড়ি ছোটরায় পাঠিয়ে দেয় ইমরান ওরফে মন্টু। সুলতানা তার বাবা মাকে ঘটনা বললে তার বাবা মা ইমরানের বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করে সালিশের তারিখ করে। সালিশে ১লাখ টাকা না দিলে সুলতানাকে নিয়ে সংসার করবে না এবং বেশি টাকা যৌতুক নিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করবে বলে জানায় ইমরান। দরবারে কেনো সুরাহা না নিতে পেরে বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করে সুলতানা। ইমরান মামলা না করার জন্য সুলতানার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান করে বলে জানান সুলতানা। মামলা দায়েরের কিছুদিন পরে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে কোতয়ালি থানায়। ওয়ান্টে আসার পর থেকে পলাতক ছিল ইমরান।

এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম হোসেন জানান, আমাদের কাছে ওয়ারেন্ট ছিল, আসামীকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছিল দীর্ঘদিন থেকে, পলাতক থাকার কারনে এতদিন তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার রাতে দুর্গাপুর চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে কোটে চালান করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন