কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের (কুভিক) সমাজকর্ম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে বিভাগের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ ৫শ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষর্থীদের থেকে তিন ক্যাটাগরীতে কোন প্রকার রসিদ ছাড়াই অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। খোজ নিয়ে জানা যায়, ফি নেওয়ার তিনটি ক্যাটাগরী হলো এ, বি ও সি। ‘এ’ ক্যাটাগরীতে হচ্ছে যারা কোন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি, তাদের কাছ থেকে ৬শ টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরীতে ৪শ টাকা, এর অন্তর্ভূক্ত হলো প্রথম ও দ্বিতীয় ইনকোর্স পরীক্ষার মাঝে যে কোন একটি ইনকোস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অন্যটিতে করেনি। ‘সি’ ক্যাটাগরী দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথমটি হলো পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হলেই ১শ টাকা। দ্বিতীয়টি হলো একটি বা দুইটি বিষয়ে অনুপস্থিত হলেই ২শ টাকা। এছাড়াও ক্যাটাগরীগুলোর বাইরে বিভাগের শিক্ষক রুমে এই সেশনের সকল শিক্ষার্থী কাছ থেকে এয়ারকন্ডিশনার (এসি) বাবদ অতিরিক্ত মাথাপিছু ৫শ টাকা ফি আদায় করছে সমাজকর্ম বিভাগ।

এছাড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে একই সেশনের মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ে ৫০ টাকা করে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তাছাড়াও বিভাগের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ ৫শ টাকা করে ফি আদায়ের অভিযোগ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীদের।

পেয়ার, মোঃ রনিসহ অন্তত ১০থেকে ১২জন শিক্ষার্থী জানান, বিভাগের শিক্ষকদের অফিস রুমের জন্য এয়ারকন্ডিশনার (এসি) ক্রয় করার জন্য শিক্ষার্থীদের ডেকে বাধ্যতামূলক ফি আদায় করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের। যারা পরীক্ষার ফি দিতেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এছাড়া নামে-বেনামে বিভিন্ন ক্যাটাগরী ভাগ করে অতিরিক্ত ফি আদায় করে আসছে। এতে করে শিক্ষার্থী এসব ফি পরিশোধে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।

পূর্বেও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে এধরনের অনেক অভিযোগ এসেছে। এই বিভাগের প্রধান মিতা সফিনাজ র্দুনীতির অভিযোগে কলেজের মেয়েদের হোস্টেলের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

অভিযোগগুলো মিথ্যা দাবি করে সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নূর মোহাম্মদ হারেসি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ ধরণের কোন ফি আদায় করিনি। শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান করার জন্য ৫শ টাকা করে বিভাগ ফি আদায় করছে।
অতিরিক্ত ফি আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিতা সফিনাজ বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি, তাদের কাছ থেকে কলেজ অধক্ষের পরামর্শক্রমে প্রতি বিষয়ে ৫০ টাকা করে ননকলেজিয়েট ফি আদায় করছি। এছাড়া আমরা বাড়তি কোন টাকা আদায় করছি না।

এবিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা বলেন, প্রতি পত্রে ২৫টাকা করে নেওয়ার কথা বলেছি এছাড়া বাড়তি টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। এধরনের টাকা নিয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, পরীক্ষা ফি বাবৎ টাকা ভর্তির সময় নেয়া হয়। তাই পরবর্তীতে অতিরিক্ত ফি নেয়ার কোন বিধান নেই।

আরো পড়ুন