কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী যারা

ডেইলিকুমিল্লানিউজ ডেস্কঃ প্রায় দুই বছর পর অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। আগামী ৪ নভেম্বর কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাবিনা আক্তার শিউলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “যারা নিয়মিত ছাত্র, তাদেরকেই কমিটিতে স্থান দেওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে বাছাই করা হবে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদ প্রত্যাশীদের মূল্যায়ন করা হবে।”
সাংগঠনিক সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি গ্রুপিং ও লবিং চলছে। মহানগর ছাত্রলীগের এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্যের পাশাপাশি পদ-পদবি নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কাও রয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের কোন্দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ। এ কারণে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। কারণ ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল ছাত্রলীগের সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব এবং সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার সমর্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিহত হয়। জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে এই সম্মেলনেও পুরোনো কোন্দল ও দ্বন্দ্বের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার অনুসারী হিসাবে ছাত্রলীগের আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে বলেও মহানগর ছাত্রলীগের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী ছাত্রলীগের আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান মহানগর ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নাঈমুল হক হিমেল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের আহবায়ক কাজী সায়েম, মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফয়সাল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কুমিল্লা মহানগর বর্তমান ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক নূর মোহাম্মদ সোহেল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. নাছিমুল ইসলাম হেলাল ও এনামুল কবির এনাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক সম্ভব্য প্রার্থীর নাম শুনা যাচ্ছে।

অন্যদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেলমন্ত্রী মজিবুল হক মুজিবের অনুসারী বর্তমান মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম সারোয়ার কাওসার, সাকিব আল হাসান ও গোলাম মোস্তফা শরীফ সভাপতি পদে এবং মুকিত বিন হেলাল ও মো. সোহেল সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কবিরুল ইসলাম শিকদারের কর্মী শেয়াব শুভ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সম্মেলন ঘিরে মহানগর ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী একাধিক ছাত্রনেতার সাথে কথা বললে তারা জানান, সংগঠন যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আনবেন। তবে আশা করবো যারা আওয়ামী লীগের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের পাশে ছিল এবং সংগঠন ও দলের সাথে সবসময় ছিল তাদেরকেই বিবেচনা করবেন।
উল্লেখ, ২০১৫ সালের ২০ জুলাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বর্তমান কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। ২২ জুলাই এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৭ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটির মেয়াদ ছিল তিন মাস। এর আগে ১১ এপ্রিল বিকেলে কুমিল্লা টাউনহল মাঠে ছাত্রলীগের সম্মেলনে পদ-পদবি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে সাবেক শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিহত হয়। পরে ২২ জুলাই ওই মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে এমপি বাহারের অনুসারী আব্দুল আজিজ সিহানুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ৬ জন যুগ্ম-আহ্বায়ক হলেন, যথাক্রমে নাইমুল হক হিমেল, গোলাম সারোয়ার কাওসার, সাইফুল আলম রবিন, মোঃ ফয়সাল হোসেন, নুর মোহাম্মদ সোহেল ও সাকিব আল হাসান। এ কমিটির আহ্বায়কসহ ৪টি পদ পেয়েছে সদর এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নেতাকর্মীরা। বাকি ৩টি পদ পেয়েছে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব সমর্থিত নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন