কুমিল্লা সীমান্তে চোরাকারবারে ঝুঁকছে শিশুরা

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা সীমান্তে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংকটে সীমান্ত এলাকার শিশুরা ব্যাপক হারে জড়িয়ে পড়ছে মাদক বহন ও চোরাচালানে। জেলার ৫টি উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের শিক্ষাবঞ্চিত অধিকাংশ শিশুরা জীবিকার তাগিদে মাদকসহ অবৈধ পথে আসা পণ্য বহনকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা শিক্ষায় পিছিয়ে থাকার পেছনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংকট এবং দূরত্বকে দায়ী করছেন। শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া এসব শিশুর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় সীমান্তে প্রতিনিয়তই শিশু-কিশোর অপরাধীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে এবং শিশু-কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সমাজের শিক্ষা সচেতন মহল দাবি জানিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সীমান্ত মানেই চোরাচালান আর মাদকের অবাধ বিচরণ। এই অবাধ বিচরণ ঠেকাতে শিক্ষা কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারছে। তবে সচেতন লোকজন মনে করেন- শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলেই কমে আসবে অপরাধপ্রবণতা। স্থানীয়দের মতে, সীমান্ত এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংকট এবং দূরত্বের কারণে ছেলেমেয়েরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে চায় না, কুমিল্লায় প্রায় একশ’ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। জেলার চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ, আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া- এই ৫টি উপজেলায় রয়েছে ভারত সীমান্ত। সীমান্তের নিকটবর্তী এসব উপজেলার গ্রামগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তুলনামূলকভাবে একেবারেই কম। এছাড়াও একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যটির বেশ দূরত্বের ফলে বাড়ছে ড্রপআউট। তাই এসব এলাকায় বাড়ছে সীমান্ত অপরাধ, মাদক ও বাল্যবিয়ের মতো ঘটনা।

সরেজমিন কুমিল্লা আদর্শ উপজেলার সীমান্তের ছয়গ্রামে গিয়ে জানা যায়, গ্রামের শিশুরা ছোট থেকে জড়িয়ে পড়েছে চোরাকারবারিদের পণ্য বহনের কাজে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দূরে হওয়ার কারণে শিশু বেলা থেকেই বাশারের সন্তানরা জড়িয়ে পড়েছে সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান বহনে। স্থানীয়রা জানান, ছয়গ্রাম ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। ঠিক এরকম প্রায় ৪টি ওয়ার্ডের শিক্ষার্থীরা যে স্কুলটিতে প্রতিদিন যায় সেটির দূরত্ব প্রায় ৩/৪ কিলোমিটার। দূরত্বের কারণে বাড়ছে ড্রপআউটের সংখ্যা, লেখাপড়া ছেড়ে প্রবাসের শ্রমের বাজারে ঢুকছেন সন্তানরা- আর মেয়েরা লেখাপড়ায় এগুতে পারে না বেশিদূর, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, সীমান্ত এলাকায় যেসব গ্রামে বিদ্যালয় নেই সরেজমিন তদন্ত করে নতুন নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম টুটুল বলেন, সীমান্ত এলাকায় ড্রপআউট ঠেকাতে এবং শিশু-কিশোরদের চোরাচালান এবং অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে সরাতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সূত্রঃ যুগান্তর

আরো পড়ুন