ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কের ২য় কাঁচপুর সেতু উদ্বোধন আজ

ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (শনিবার) দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু উদ্বোধন করবেন। সকাল ১০টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চারলেন বিশিষ্ট এই সেতুটি উদ্বোধন করবেন তিনি।

এ ছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূলতায় একটি চারলেন ফ্লাইওভার এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে লতিফপুরে একটি রেলওয়ে ওভারপাসও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের দুটি প্রধান নগর রাজধানী ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এতে অতিক্রম করতে হয়েছে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতী নদী। ফলে ১৯৭৭, ১৯৯১ ও ১৯৯৫ সালে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতী নদীর ওপর দিয়ে নির্মাণ কারা হয় ২ লেন বিশিষ্ট কাঁচপুর সেতু এবং ২ লেন বিশিষ্ট মেঘনা ও গোমতী সেতু।

দেশের অর্থনৈতিক লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত এ মহাসড়কে প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে। ফলে এত যানবাহন ধারণ করার জন্য মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু সেতু তিনটি অসামর্থ হওয়ায় সারা বছরই যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পরিবহন চালক, যাত্রীসহ পথচারীদের। এ দুর্ভোগ দূর করতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু, মেঘনা দ্বিতীয় সেতু ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সেতু উদ্বোধনের ফলে যানজটের দুর্ভোগ কমে আসবে।

এদিকে সেতুর সব ধরনের নির্মাণকাজ শেষ। চার লেনের মধ্যে বসেছে সড়ক বিভাজক। পথচারীদের জন্য আছে প্রশস্থ ওয়াকওয়ে। উদ্বোধন না হওয়ায় সেতুর দুই পাশ বর্তমানে আটকে রাখা হয়েছে।

এছাড়া পূর্ব দিকে সেতুর নিচ দিয়ে ইউটার্ন হয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের যানবাহনগুলো চলছে। তবে সিলেট মহাসড়ক হয়ে ঢাকায় প্রবেশের উড়াল সড়কের কাজ এখনও শেষ হয়নি। দ্রুত গতিতে চলছে ওই সড়কের কাজও।

কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতু পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক আবু সালেহ মো. নুরুজ্জামান জানান, চার লেনের নতুন কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুটির ভিত্তি কংক্রিটের ঢালাই এবং ৫টি পিলারের ওপর স্টিল গার্ডারের। ১০০ বছরের স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে নির্মাণ করা সেতুটির ঠিকাদার যৌথভাবে জাপানি চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান- ওবায়শি, শিমিজু, জেএফআই ও আইএইচআই। আর সেতুর উপ-ঠিকাদার বাংলাদেশের মীর আকতার হোসেন। মূল সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ১ হজার ৩০০ কোটি টাকা। মোট ব্যায়ের ৭৫ ভাগের যোগান দেয় জাইকা। আর ২৫ ভাগ অর্থ ব্যয় হয় বাংলাদেশ সরকারের। নতুন এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৯৭ দশমিক ৩০ মিটার। প্রস্থ ১৮ দশমিক ১ মিটার।

আবু সালেহ মো. নুরুজ্জামান বলেন, কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় ১০ মার্চ উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। তবে আগামী ১৬ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন করবেন। মে অথবা জুনের মধ্যে মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুরও উদ্বোধন করবেন তিনি। মেঘনা দ্বিতীয় সেতুর ৮৫ ভাগ ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর কাজ ৮৪ ভাগ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন সেতুটি চালু হওয়ার পরই পুরনো সেতুটির মেরামত কাজ শুরু হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ পুরাতন ব্রিজটির কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দুটি সেতু এক সঙ্গে চালু থাকলে যানজট থাকবে না বলে তিনি জানান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) মোল্যা তাসলিম হোসেন বলেন, তিনটি সেতুর কাজ শেষ হলে যানজট থাকবে না। এতে ঢাকা-চট্টগাম মহাসড়কে দ্রুত গাড়িগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।

আরো পড়ুন