নাঙ্গলকোটে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু পরিবারের অভিযোগ যৌতুকের জন্য হত্যা

মো. ওমর ফারুকঃ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সুমি আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার উপজেলার পেরিয়া ইউপির শ্রীফলিয়া গ্রামের মুন্সি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। সে ওই গ্রামের দুবাই প্রবাসি সোহেল হোসেন ওরফে সোহাগের স্ত্রী ও আদ্রা উত্তর ইউপির মেরকট গ্রামের খোরশেদ আলমের মেয়ে। সুমিকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দেড় বছর আগে শ্রীফলিয়া গ্রামের মুন্সি বাড়ির মাঈন উদ্দিনের বড় ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে সোহাগের সঙ্গে পারিবারিক ভাবে সুমি আক্তারের বিবাহ হয়। বিবাহের সময় সুমির পরিবার যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা সোহাগের পিতা মাঈন উদ্দিনের নিকট দেন। ওই যৌতুকের টাকা তার পিতার নিকট দেয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয় সোহাগ। এনিয়ে সোহাগ প্রায় সময় সুমিকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্যকরতে না ফেরে গত ৬ মাস পূর্বে সুমি তার পিতার বাড়ি মেরকটে চলে যায়। পরে পেরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদের জিম্মাদারিতে সুমিকে তার শ্বশুর বাড়িতে শ্রীফলিয়া আনা হয়। রবিবার সকালে খাঁটের উপর শোয়া অবস্থায় সুমির লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। সোহাগ ইতিপুর্বে আরো ২টি বিবাহ করেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে সোহাগের পরিবারের সকল সদস্য আতœগোপনে রয়েছে।

এ বিষয়ে নিহতের মা পারুল বোগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সোহাগ তার শ্বশুর বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেন আপনাদের মেয়ে (সুমি) অসুস্থ। আপনারা আমার কোন কথা বিশ্বাস করেন না। আমাদের বাড়িতে গিয়ে তাকে দেখেন। এরপর শ্রীফলিয়া গ্রাম থেকে একজন সিএনজি চালক মুঠো ফোনে জানায় আপনাদের মেয়ে সুমি মারা গেছে। এসে দেখি খাঁটের উপর মেয়ের লাশ পড়ে আছে। যৌতুকের জন্য শ্বশুর বাড়ীর লোকজন সুমিকে হত্যা করেন। তিনি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, আমি ৬ মাস আগে শালিসের মাধ্যমে সুমিকে নিয়ে আসি। এরপর থেকে আর কোন সমস্যার কথা শুনেনি।

এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: নজরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। নিহতের গায়ে আঘাতের কোন চিহৃ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন