বিদ্যুৎকাণ্ডে মুক্তি পেলেন কুমিল্লার সেই মতিন, তদন্ত কমিটি

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় সংযোগ না পেয়েও বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের মামলায় গ্রেফতার দিনমজুর আব্দুল মতিন মিয়া (৪৫) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মতিনকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের খবর আইনজীবীরা নজরে আনলে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি পান আব্দুল মতিন।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), কুমিল্লার জেলা প্রকল্প কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট ছানা উল্লাহ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘নিরপরাধ আব্দুল মতিন মিয়াকে কারাগারে নেয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে তা আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে তার জামিন মঞ্জুর করেন।’

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মতিন বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলেও দীর্ঘ ১৭ মাসের বকেয়া বিলের দায়ে গ্রেফতার হন।

পরের দিন বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আব্দুল মতিনের গ্রেফতারের বিষয়টি জানাজানি হলে জেলায় তোলপাড় শুরু হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন খামখেয়ালিপনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুরাদনগরের সর্বস্তরের মানুষ।

নিউজপোর্টাল পরিবর্তন ডটকমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও বিষয়টি ফলাও করে প্রকাশ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্লাস্ট কুমিল্লার সহায়তায় একদিন কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন আব্দুল মতিন।

তদন্তে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিই

যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মামলায় আব্দুল মতিন বিনাদোষে একদিন কারাবাস করলেন, সেই ঘটনা তদন্তের ভার তারাই করছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবিদ্বার জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মৃনাল কান্তি চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং বাঙ্গরা-দৌলতপুর জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজুর রহমানকে সদস্য করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার দুপুরেই একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পরে তাৎক্ষণিকভাবে কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান মৃনাল কান্তি চৌধুরী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি। এখন প্রাসঙ্গিক কিছু কাজ শেষে প্রতিবেদন জমা দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল মতিনের নামে মিটারটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সফিকুল ইসলামের বাড়িতে সংযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু, সফিকুল ইসলামও বিষয়টি অফিসকে জানাননি এবং বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। মতিন নোটিস পেয়েও তার ঘরে বিদ্যুৎ না থাকায় বিষয়টি আমলে নেননি। ভুল বোঝাবুঝির ভিত্তিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে।’

আরো পড়ুন