বুড়িচংয়ে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার বুড়িচংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা এখন প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। থানার ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে পুনর্বহাল করায় এসব মাদক ব্যবসায়ীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

গত ২৭ মার্চ ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে বুড়িচং থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। এ সময় নতুন ওসি থানায় যোগদানের পর উপজেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৭ জুন আকুল চন্দ্রকে পুনর্বহালের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী উপজেলার চড়ানল গ্রামের মো. মহাসিন, হুমায়ূন মেম্বার, পাইকোডা গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন ওরফে মামা জসিম, জগতপুর গ্রামের কামাল হোসেন ওরফে ফেন্সি কামাল, শংকুচাইল গ্রামের বিল্লাল, আনন্দপুর গ্রামের আবদুর রহমানসহ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকায় প্রকাশ্য ঘোরাফেরা করছে। এ ছাড়াও সংকুচাইলের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কাজল খান, রবিউল ইসলাম রবিসহ বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ী এখন এলাকায় এসে সীমান্তের মাদক স্পটগুলোকে ফের জমজমাট করে তুলেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা যায়, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলা ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় এ উপজেলায় কয়েকশ’ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এবং চোরাকারবারি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। এসব মাদক ব্যবসায়ীর মাঝে বেশ কয়েকজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত রয়েছে। গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাদকবিরোধী অভিযানে এ উপজেলার ক্ষুদ্র কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী পাকরাও হলেও মাদকের গডফাদার এবং মাদক ব্যবসা করে কোটিপতিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে থানা পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে শীর্ষ এ মাদক ব্যবসায়ীরা বহালতবিয়্যতে রয়েছে। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের নিযুক্ত বিক্রেতাদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানায়, থানার ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর যোগদানের পর থেকে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা শান্তিপূর্ণভাবে এলাকায় অবস্থান করে তাদের মাদক ব্যবসাসহ নানা চোরাই কারবার চালিয়ে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে বুড়িচং থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অধিকাংশ চোরাকারবারির সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি এ থানায় ওসি হিসেবে যোগদানের পর ওইসব মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারির জন্য থানা এলাকা সেফ জোনে পরিণত হয়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আকুল চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নেয়া এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম খান। পরে ২৭ মার্চ তাকে প্রত্যাহার করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আনোয়ার হোসেনকে পদায়ন করলে তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। এতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়ে। এ সময় বুড়িচং উপজেলার প্রায় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আকুল চন্দ্র বিশ্বাস এই থানায় যোগদানের পর মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদক সেবনকারীদের ব্যাপক উৎপাত বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমার পুনর্বহালে মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি কথাটি সঠিক নয়, কোনো মাদক ব্যবসায়ী কিংবা চোরাকারবারির সঙ্গে আমার যোগসাজশ নেই।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদক কারবারিদের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্যের যোগসূত্রের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্রঃ যুগান্তর

আরো পড়ুন