ব্রাহ্মণপাড়ার সেই সড়কটি জন দূর্ভোগ চরমে, আজও সংস্কার হয়নি

আশিকুর রহমানঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার দুই উপজেলার সহজ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম দুলালপুর থেকে কালিকাপুর সড়কটি আজও সংস্কার হয়নি। গত কয়েক বছর যাবত এ সড়কে বেহাল অবস্থা হওয়ায় দিনে দিনে জন দূর্ভোগ বাড়ছে। সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট বড় গর্ত হয়ে মানুষের মরণ ফাদে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। সরজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে এই সড়কটির। যাত্রী ও পথচারীদের দাবী, দুই উপজেলার সেতু বন্ধনকারী এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে যেন পূর্বের মত উপযোগী করে দেওয়া হয়।

সরজমিনে ঘুরে আরো দেখা যায়, দেবিদ্বার উপজেলা সদর, ময়নামতি ক্যান্টেরমেন্ট, ঢাকা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা থেকে দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর বাজার হয়ে লিকাপুররে এই সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত এভাবেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। নজরে আসছেনা জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন সহ কারোরি। এই ব্যপারে এলাকাবাসী জানায়, এই সড়ক দিয়ে দৈনিক ছোট বড় যানবাহন সহ কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই সড়কের কোন উন্নয়ন ও সংস্কার করা হয়নি। যার কারনে দু’ উপজেলার ৫০/৬০ টি গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচলে কষ্ট পেতে হচ্ছে।

এই ব্যাপারে দেবিদ্বারের কালিকাপুর গামী সিএনজি যাত্রী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বালিনা গ্রামের কাওরান মোল্লা বলেন, এ সড়কটির পিচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট বড় গর্ত হওয়ায় এই সড়ক দিয়ে সিএনজি (অটো রিক্সা) সহ ছোট ছোট যানবাহন চলা চল দিনে দিনে কমে আসতেছে। যানবাহন কমে আসার কারনে এবং এই সড়কটির বেহাল দশা হওয়ায় সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।

সিএনজি যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, আগে আমরা দুলালপুর থেকে কালিকাপুর যেতে সিএনজি ভাড়া দিতে হত ৩০ টাক। বর্তমানে সড়কটি ভেঙ্গে বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে যাওয়ায় আমাদের কাছ থেকে সিএনজি চালকরা ভাড়া নেয় ৫০ টাকা। আবার সন্ধ্যার পর একই ভাড়া দিতে হয় ১০০ টাকা।

সিএনজি চালক কালিকপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, এই সড়ক দিয়ে দেবিদ্বার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার হাজার হাজার মানুষ দৈনিক চলা চল করতো। তখন আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে সিএনজি ভাড়া নিতাম ৩০ টাকা। গত কয়েক বছর যাবত এই সড়কটির বেহাল দশা হওয়ায় যাত্রী কমে গেছে। যাত্রীরা এখন ঘুরে অন্য সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এই সড়কে গাড়ি চালিয়ে মালিক জমা, গ্যাসের বিল ও বিভিন্ন খরচ দিয়ে দিন শেষে আমাদের বেতন নিতে কষ্ট হয়। সিএনজি চালক লিটন মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার দুই উপজেলার সহজ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম দুলালপুর থেকে কালিকাপুর সড়কটির পিচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট বড় গর্ত হয়ে যাওয়ায় সিএনজি মালিকরা এক এই সড়কে গাড়ি চালাতে ড্রাইভারদের নিষেধ করে এবং গাড়ি দিতে চায় না। এই সড়কে একদিন গাড়ি চললে পরদিন ঐ গড়িটি ঠিক করার জন্য গ্যারেজে নিতে হয়। এখন আর আগের মত এই সড়কে গাড়ি চালিয়ে পোষায় না। যার কারনে এই সড়কে দিনে দিনে সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল কমে আসতেছে।

এই ব্যাপারে দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান রিপন ভূইয়া বলেন, আমি বেশ কয়েক বার উপজেলা প্রৌকশলীকে এই সড়কটির বিষয়ে জানিয়েছি এবং উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির মিটিংয়েও এই সড়টির বিষয়ে উপস্থাপন করেছি। আশা করছি অচিরেই এই সড়কটির সংস্কার করে দেবিদ্বার ও ব্রাহ্মণপাড়া দুই উপজেলার মানুষের চলা চলে উপযোগী করে দেওয়া হবে।

এই ব্যাপারে উপজেলা প্রৌকশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই সড়টি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আওতায় প্রায় ৩ কিঃ মিঃ এর মত রয়েছে। এই সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। দ্রুত এই সড়কটির সংস্কার কাজ করে মানুষের চলা চলে উপযোগী করে তোলা হবে।

আরো পড়ুন