ব্রা’হ্মণপাড়ায় ডায়’রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে, ২০ দিনে আ’ক্রান্ত ৩ শতাধিক

আশিকুর রহমানঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। গত ২০ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় তিন শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু রোগী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ সদরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। কেউ কেউ চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।

শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই প্রতিদিন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০ থেকে ২৫ জন রোগী অন্তঃ বিভাগে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা সদরের প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু ও বয়স্ক রোগী রয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ওইসব রোগীদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে জায়গা নিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন যাবত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই ১২ থেকে ১৫ জন রোগী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। গত ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ২০ জানুয়ারি সোমবার পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় চার শতাধিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বৈরি আবহাওয়া, তীব্র শীত, অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এর প্রকোপ ঘটেছে। হাসপাতালে ভর্তির পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তারা সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন।

গত এক সপ্তাহ থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক রোগীকে হাসপাতালের বেডে, মেঝেতে ও বারান্দায় চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এসব রোগীরা প্রচন্ড জ্বর, শরীর ব্যথা এবং শিশুরা সাধারণত বমি, পাতলা পায়খানা ও পেটের ব্যথায় ভুগছিল, পরে অবস্থা সংকটাপূর্ণ ভেবে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শঙ্খজিৎ সমাজপতি বলেন, শীতকালে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ডায়রিয়া রোগ বেড়ে চলেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। চলিত মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ২৫০ জনের মত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে। এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে অন্তত ৫ থেকে ৭ দিন ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। পানি শূন্যতা পূরণের জন্য খাবার স্যালাইন বেশি বেশি খেতে হবে।

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবু হাসনাত মোঃ মহিউদ্দিন মুবিন জানান, ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়টিক গ্রহণ করতে পারবে না। এসময় তিনি, ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগীসহ সকল রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমানে ঔষুধ সরবরাহ আছে। এ রোগের ক্ষেত্রে কোথাও কারো শরনাপন্ন না হয়ে সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীকে নিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

আরো পড়ুন