রোজায় লাকসামে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন

বিশ্ব মহামারী করোনা প্রকোপের মধ্যে এবার পবিত্র রমজান শুরু হয়েছে। মহামারীর কারণে এমনিতেই সাধারণ মানুষের নাবিশ্বাস হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষের কর্ম চা ল্যতা থেমে গিয়ে ঘরবন্দী এবং অর্থনৈতিক সংকট থাকায় তারা পড়েছে বিপাকে। তার উপর রমজানে লাকসামে নিত্যপণ্যের বাজারে যেন আগুণ লেগেছে।

রমজান উপলক্ষে চিনি, ডাল, আদা ও মসলার দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সিয়াম সাধনার মাসে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে খুচরা বাজারে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। এছাড়া আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি ও মাছ। কয়েকটি সবজি বাদে বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। তবে নতুন করে বাড়েনি পিয়াজের দাম। আর দাম স্থীতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের। লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

লাকসামের নিত্যপণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষে চিনি, ডাল, আদা ও মসলার দাম আরো বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম কেজিতে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে খুচরা বাজারে চিনির দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমেছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যমূল্যের তালিকা অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল। এখন যা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, রমজানের আগে বাড়তি চাহিদার কারণে মিলগুলোতে পণ্য সরবরাহে চাপ তৈরি হয়। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম কিছুটা বেড়ে যায়।

দৌলতগঞ্জ বাজারের মুদি দোকানী শম্ভু সাহা জানান, রমজানে বাড়তি চাহিদা থাকায় সরু মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল ও খেসারির ডালের দাম বেড়েছে। যা একমাস আগে প্রতি কেজি দেশী ডালের দাম ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা ছিল। এখন যা ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নেপালি ডালের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। বর্তমানে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা ও মসলা। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আদা। যা একমাস আগে প্রতি কেজি আদার দাম ৯০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। এখন যা ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মসলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। যা একমাস আগে প্রতি কেজি এলাচের দাম ১৭০০ থেকে ২২০০ টাকা ছিল। এখন ৪০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পিয়াজ ও রসুনের দাম কমেছে। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, দেশি রসুনের কেজিপ্রতি দর ১০০ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ৯০ টাকায় নেমেছে।

মুরগী দোকানী আনোয়ার হোসেন জানান, সপ্তাহ খানেক আগে ডিমের ডজনপ্রতি দর ১০৫ টাকা ছিল। এখন তা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দর কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের দাম আগের মতোই চড়া। সবজির দামও কমছে না। ফলে বাজারের বড় অস্বস্তি এখন সবজি ও মাছ। গরুর মাংসের দামও রয়েছে চড়া।

এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার দেখা গেছে, আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। শসা ৫০-৬০, বেগুন ৬০-৭০, পাকা টমেটো ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে পটল ৪০-৫০, সজনে ডাটা ৬০-৮০, বরবটি ৬০-৭০, কচুর লতি ৭০-৮০, করলা ৬০-৭০, গাজর ৩০-৪০, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০-৫৫০ টাকা কেজি। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়। মাংসের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজিতে। পাঙাশ ১৫০-১৮০, রুই ২৫০-৪৫০, পাবদা ও টেংরা ৭০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা কেজি।

আরো পড়ুন