কুমিল্লায় ‘ভুল অপারেশনে’ মৃত্যু, একমাস পর কবর থেকে তোলা হলো মরদেহ

কুমিল্লার দেবিদ্বারে চিকিৎসকের ‘ভুল অপারেশনে’ মারা যাওয়া প্রসূতি শারমিন আক্তারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য একমাস পর কবর থেকে তোলা হয়েছে।

বুধবার সকালে দেবিদ্বারের মুরাদনগরের মুগসাইর গ্রামের স্বামীর পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামেরর উপস্থিতিতে মরদেহ তোলে পুলিশ। পরে মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানার এসআই ইকতার মিয়া।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গৃহবধূর শারমিন আক্তার।

দেবিদ্বার থানার এসআই ইকতার হোসেন জানান, ওই গৃহবধূর মৃত্যুর পর তার পরিবার থানায় মামলা করে। তাই তদন্তের স্বার্থে আদালত আদেশ দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বুধবার সকালে মরদেহ তুলে মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহ তোলার সময় মামলার বাদী ও শারমিনের বাবা মোবারক হোসেন ও স্বামী রাসেল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো জানান, মামলার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর মুরাদনগর উপজেলার মুগসাইর গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দেবিদ্বার আল ইসলাম হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশন করেন ওই হাসপাতালের খণ্ডকালীন চিকিৎসক ডা. রোজিনা আক্তার ও তার সহযোগী ডা. শামীমা আক্তার লিটাসহ অন্যান্যরা। জন্ম নেয় ছেলে সন্তান। গত ৯ নভেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়।

শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, ওই প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে বোনকে বাড়ি নেয়ার পর ব্যথা আরো বেড়ে যায়। পরে তাকে কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। কোথাও উপসম না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল জেলার ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় তাকে অপারেশন করা হলে পেট থেকে গজ বের করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১০ এপ্রিল ভোরে তাকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়। ১৩ এপ্রিল রাত দেড়টার সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পরদিন অপারেশনকারী সার্জন ও দেবিদ্বার উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রোজিনা আক্তার ওই প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা আক্তার লিটা, এনসথেসিয়া ডা. মাহমুদুল হাসান পারভেজ, হাসপাতালের চেয়ারম্যান নজির আহমেদ ও গ্রাম্য চিকিৎসক সফিকুর রহমানকে অভিযুক্ত করে প্রসূতির বাবা মোবারক হোসেন বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন।

ডেইলি বাংলাদেশ

আরো পড়ুন