এমপি রাজী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের হাত মিলিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা

কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সঙ্গে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব আপাত নিরসন হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বরে দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার কথাও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

রবিবার রাতে সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে আজ দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বলেন, ‘আজ কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং ছিল। সেখানে আমাদের মীমাংসা করিয়ে দেয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরে সম্মেলন করতে বলা হয়েছে। আমরা মিলে মিশে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেব।’

উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মীমাংসা হয়ে গেছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

২৬ বছর পর গত ২১ জুলাই দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু দুইজনের মধ্যে বিরোধের কারণে সম্মেলন স্থগিত হয়।

এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন’। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার বলেন, ‘১৬ জুলাই জাতীয় সংসদের মেম্বার্স ক্লাবে সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল আমাদের প্রিয় সহকর্মী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন। এই ঘটনায় আমরা আহত হয়েছি। ‘ব্যক্তিত্ব, আত্মমর্যাদা, সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য’ আমরা ৪৯২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ অন্য জনপ্রতিনিধি একসঙ্গে পদত্যাগ করব।’

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুজন জনপ্রতিনিধির মধ্যে সংঘটিত একটি ঘটনার জেরে দেশের সব উপজেলা চেয়ারম্যানদের একাট্টা এমন অবস্থান নজিরবিহীন।

সেদিন যা ঘটেছিল

১৬ জুলাই কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সঙ্গে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদের মধ্যে মারামারির ওই ঘটনা ঘটে। জাতীয় সংসদ ভবনে ভবনের এলডি হলে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল। তবে বৈঠকটি পণ্ড হয় অশোভন ঘটনা দিয়ে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের কৌতূহলী প্রশ্ন, সেদিন আসলে কে কাকে মেরেছেন? কে আগে মেরেছেন চেয়ারম্যান না এমপি? সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। অন্যদিকে আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

জানা যায়, ২১ জুলাই দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা। এই সম্মেলন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় এলডি ক্লাবে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এলাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণার পর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিনের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

এমন ব্যবহারের প্রতিবাদ করেন এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানকে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এমপি ফখরুলের দিকে তেড়ে যান আবুল কালাম আজাদ।

আরো পড়ুন