কুমিল্লায় ধ’র্ষণচেষ্টার মামলা তুলে নিতে কিশোরীসহ পরিবারকে প্রকাশ্যে নি’র্যাতন

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ধ’র্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেওয়ায় এক কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লা’ঠিপেটা করে নি’র্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নির্যাতনের ৩২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তুমুল সমালোচনা চলছে। মামলার আসামিরা হলেন-কুরছাপ গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম, তার দুই ছেলে মো. কাউছার আহম্মেদ ও মো. হাসান এবং দুই পুত্রবধূ আনিকা ও নারগিছ আক্তার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৩২ সেকেন্ডর ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ধ’র্ষণচেষ্টার মামলার আসামি মো. হাসানের বড়ভাই কাউছার আহম্মেদ ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে লা’ঠিপিঠা করছেন। এ সময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে ওই কিশারীর মা অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর আগে ওই কিশোরী ও তার বাবা জামাল হোসেনকে প্রকাশ্যে মা’রধর করেন কাউছার ও তার পরিবার।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ মে বিকেল ৩টায় ওই কিশোরীকে একটি খালি ঘরে নিয়ে ধ’র্ষণচেষ্টা চালান হাসান। এ ঘটনা হাসানের চাচি দেখে ফেললে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় লোকজন এসে ওই কিশোরীকে ঘর থেকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পরদিন ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেন কুমিল্লা আদালতে নারী ও শিশু নি’র্যাতন দমন আইনে একটি ধ’র্ষণচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় হাসানের পরিবার।

পরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মামলা তুলে নিতে ওই কিশোরীর পরিবারকে চাপ দেয় হাসানের পরিবার। এতেও কোনো কাজ না হওয়ায় প্রথমে ওই কিশোরীর বাবাকে পরে কিশোরীকে বেদম মা’রধর করেন হাসানের পরিবারের লোকজন। গত ২০ আগস্ট দুপুরে হাসানের বড়ভাই কাউছার কিশোরীর মাকে রাস্তায় পেয়ে প্রকাশ্যে লা’ঠিপেঠা করেন।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক যুবক ফেসবুকে ভিভিওটি পোস্ট করলে মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, হাসান আমার মেয়েকে ধ’র্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আমি কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার দায়েরের পর থেকে তা তুলে নিতে কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় হাসানের পরিবার আমাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। মামলা তুলে না নেওয়ায় আমার স্ত্রীকে প্রকাশ্যে লা’ঠিপেটা করেছে।

‘এর আগে আমার মেয়ে ও আমাকেও এভাবে রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে লা’ঠিপেটা করেছে। আমরা গরিব হওয়ায় বিচারের ডাকে কেউ আসেনি। আমি গ্রামের মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কেউ আমার বিচার করে দেয়নি। পরে কোনো উপায় না পেয়ে থানায় এসেছি।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। দোষীদের গ্রে’ফতার করতে অভিযান চলছে।

আরো পড়ুন