কুমিল্লায় নকশাবহির্ভূত ভবন ভাঙতে হাইকোর্টের রুল

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) উত্তর আশ্রাফপুর এলাকার একটি বহুতল ভবনের অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত অংশ ভেঙে অপসারণের ক্ষেত্রে মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিষ্ক্রিয়তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ভবন নির্মাণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়ে জবাব দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

ওই ভবনের লাগোয়া ক্ষতিগ্রস্ত এক বাসিন্দা এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দাখিলকৃত পৃথক দুটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

উভয় রিট আবেদনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, কুসিক মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ভবনের দুই মালিকসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনকারীদের অভিযোগ, নগরীর উত্তর আশ্রাফপুর (হালুয়াপাড়া) এলাকার মো. জয়নাল আবেদীন ও মোশারফ হোসেন সিটি করপোরেশন থেকে ৫তলা ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন নিয়ে সেখানে ৬তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কিন্তু তারা নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্রের শর্তাবলি আমলে না নিয়ে চারপাশে কোনরকম জায়গা ছাড় না দিয়ে ইমারত নির্মাণ আইন অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন। এতে নির্মাণাধীন ওই ভবনের লাগোয়া ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা ছাড়াও ইবনে তাইমিয়া স্কুল এ- কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক বাসিন্দা ও কলেজ কর্তৃপক্ষ সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু সিটি কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মাণাধীন ভবনের অংশ ভেঙে অপসারণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশী মো. ইউসুফ আলী এবং ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শফিকুল আলম হেলাল বাদী হয়ে হাইকোর্টে পৃথক রিট পিটিশন দাখিল করেন।

দুটি রিট পিটিশনের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ১৫ ডিসেম্বর ওই আদেশ দেন।

বাদীপক্ষের অ্যাডভোকেট সাদিয়া তাসনিম জানান, ‘আদালত মো. ইউসুফ আলীর মামলায় কুমিল্লা সিটি মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভবন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত ভবনের অংশ ভাঙার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন এবং অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শফিকুল আলম হেলালের মামলায় একই কারণ জানতে চেয়ে ভবন নির্মাণে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুলের জবাব দাখিলের জন্য আদেশ দিয়েছেন।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কুসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখ মো. নুরুল্লাহ বলেন, ‘জয়নাল আবেদীন ও মোশারফ হোসেনকে সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর ৩দিনের মধ্যে অনুমোদিত নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মিত ভবনের অংশ নিজ দায়িত্বে ভেঙে অপসারণ করার জন্য চূড়ান্ত নোটিস দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা তা করেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্টে মো. ইউসুফ আলী ও ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শফিকুল আলম হেলালের দায়ের করা পৃথক রিট পিটিশনের দুইটি আদেশের কপি আমরা পেয়েছি এবং পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তা সিটি করপোরেশনের আইনজীবীর কাছে দেয়া হয়েছে।’

আরো পড়ুন