কুমিল্লায় মাইক্রোবাসের আন্তঃজেলা সার্ভিস!

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে তিনদিনের সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হয়েছে। এ সময়ে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সকাল থেকেই যাত্রীবহন করে চলছে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। যাত্রীদের অভিযোগ, চালকরা লকডাউনের দোহাই দিয়ে আদায় করছে তিন থেকে চারগুণ বেশি ভাড়া। তোয়াক্কা নেই স্বাস্থ্যবিধিরও।

সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্বরোড থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলায় মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।

চালকরা বলছেন, বিশেষ ব্যবস্থায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছান তারা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে কেন নামানো হয়েছে পরিবহন এমন প্রশ্নে তারা বলেন, সড়কে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দিয়েই গাড়ি চালাচ্ছেন। ফলে মহাসড়কে পুলিশি ভয় নেই তাদের।

সড়কে দেখা মিলল মাইক্রোবাসের আন্তঃজেলা সার্ভিসের। চট্টগ্রামের উদ্দেশে এসব গাড়ি যাত্রী নিচ্ছে গাদাগাদি করে। আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বিশ্বরোড থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীকে দিতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক যাত্রী।

এ স্থান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে আন্তঃজেলা সার্ভিস দিতে দেখা গেছে। তাদের পদুয়ার বাজার থেকে ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত জনপ্রতি ২০০ টাকা করে যাত্রী নিতে দেখা গেছে। আর চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত নিচ্ছেন ১০০ টাকা।

কথা হয় চট্টগ্রামগামী খাইরুল এনাম নামে ওষুধ কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সড়কে গণপরিবহন না থাকায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে গাদাগাদি করে মাইক্রোবাসে উঠেছি। ২০০ টাকার ভাড়া এখন দিতে হবে ৭০০ টাকা।’

দিদার হোসেন নামের এক আইনজীবী বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে চৌদ্দগ্রাম থেকে পদুয়ার বাজার এলাকা পর্যন্ত আসতে গুনতে হয়েছে ১০০ টাকা।’

বিকাশ চন্দ্র সরকার নামে এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে পরিবার নিয়ে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে দাঁড়িয়ে থাকতে। তিনি যাবেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায়। উচ্চ ভাড়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তাকে সপরিবারে ফিরে যেতে হয় নিজ বাসা কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়ায়।

এমদাদ, কামাল হোসেন ও সরওয়ার আলাম জানান, তারা যাত্রাবাড়ী থেকে পিকআপ ভ্যানে করে পদুয়ার বাজারে এসেছেন ৫০০ টাকা করে। তিনজনের গন্তব্য চাঁদপুরে। এবার তারা দুই হাজার টাকায় ভাড়া করেছেন একটি প্রাইভেটকার।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে কেন গাড়ি নামানো হয়েছে- এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন নামে মাইক্রোবাসের এক চালক জানান, মহাসড়কে পুলিশকে চাঁদা দিয়ে তার গাড়ি চালান। যার কারণে সড়কে এদের সমস্যা হয় না।

চালকদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামন বলেন, ‘মহাসড়কের সুগাজী থেকে ফেনী সীমান্তের দত্তসার পর্যন্ত সকাল থেকে আমাদের টহল টিম রয়েছে। পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া যাত্রীবাহী কোনো পরিবহন আমাদের চোখে পড়েনি।’

ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘চাঁদা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। আগামীকাল থেকে পদুয়ার বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

সূত্রঃ জাগোনিউজ২৪

আরো পড়ুন