কুমিল্লায় সড়কের গাছ কেটে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার পেরিয়া ইউপির নাঙ্গলকোট-বাঙ্গড্ডা এলজিইডি সড়কের চেহরিয়া ও দৌলতপুর গ্রামের রাস্তার দু‘পাশে লাগানো গাছের উদ্যোক্তাকে না জানিয়ে ও নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে অবৈধভাবে গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির মজুমদারের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী স‚ত্রে জানা যায়, গত ২০০৫ সালের ১ জুন উপজেলার পেড়িয়া ইউপির চেহরিয়া গ্রামের মৃত-রুহুল আমিনের ছেলে সামছুল হক উপজেলা বনায়ন উন্নয়নের আওতায় ইউনিয়ন পরিষদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ওই সড়কের দু‘পাশে আকাশমনি, মেহগনি, রাজ কড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩শতাধিক গাছ রোপণ করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির মজুমদার নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে ও উদ্যোক্তাকে না জানিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ১০-১২ জন শ্রমিক দিয়ে ওই সড়কের গাছগুলো কেটে পেলেন। তিনি কাটা গাছগুলো তার লোকজনের মাধ্যমে স্থানীয় স’মিলে ও মসজিদে দান করার কথা বলে নিয়ে যায়।


সরেজমিনে গিয়ে শনিবার দৌলতপুর গ্রামের আ’লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রায় ১৪ বছর প‚র্বে চেহরিয়া গ্রামের আ’লীগের কর্মী সামছুল হক গাছ গুলো রোপন করেন। তিনি পরিচর্যা করেই গাছ গুলো বড় করেছেন। রাস্তা প্রশস্ত করার অজুহাতে গাছ গুলো স্থানীয় চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মজুমদার ও মাস্টার আব্দুল খালেক ভাগ ভাটোয়ারা করে নিয়ে গেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নসিমন চালক বলেন, কয়েকটি গাছ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মজুমদার ফার্নিচার বানানোর জন্য কাকৈরতলা বাজারে দুলালের স’মিলে নিয়ে যাচ্ছেন।

গাছের উদ্যোক্তা সামছুল হক বলেন, গত ২০০৫ সালে তৎকালীন পেরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম আবুল কাশেমের মাধ্যমে চুক্তি ও অংশিদারীত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩ শতাধিক গাছ রোপন করি। চুক্তিতে স্পষ্ট উলে­খ আছে, গাছগুলো পরিপক্ক হলে উপকার ভোগী শতকরা ৬৫ভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ ২০, এনজিও ১০ ও বনবিভাগ ৫ ভাগ পাওয়ার কথা রযেছে। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে ও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে গত বৃহষ্পতিবার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির মজুমদার ও মাস্টার আব্দুল খালেক অবৈধভাবে গাছ গুলো কেটে নিয়ে যায় । আমি দীর্ঘ ১৪ বছরে গাছগুলো লাগানো ও পরিচর্যা করি। এতে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। বর্তমানে গাছগুলো কেটে নেয়ায় আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি।

অভিযুক্ত মাস্টার আব্দুল খালেকের বাড়ীর সামনে গিয়ে ১০-১২ টি গাছের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাস্টার আব্দুল খালেকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মজুমদার গাছগুলো স্থানীয় মসজিদে দান করেছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মজুমদারের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন। তিনি সাংবাদিকদেরকে ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে তার সাথে দেখা করার কথা বলেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন খন্দকার বলেন, তিনি বিষয়টি অবগত নয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার দাউদ হোসেন চৌধুরীর মুঠো ফোনে বার বার কল দিও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরো পড়ুন