কুমিল্লা ‘ট্রমালিংক’ এর সম্প্রসারণ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মহাসড়কে দূর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাদানকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘ট্রমালিংক’ কুমিল্লা জেলায় কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করেছে। জেলার দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চান্দিনার বড়গোবিন্দপুর পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। আজ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে আরও ১৫ কিলোমিটার (বারোগবিন্দপুর থেকে কোটবাড়ি বিশ্বরোড) এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির সেবা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। সুজুকি র‌্যানকন মোটরবাইকস লিমিটেড-এর সৌজন্যে আজ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলা হোটেল নুর মহল-এ এই সম্প্রসারণ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা রিজিয়ন এর হাইওয়ে পুলিশ-এর অতিরিক্ত ডিআইজি জনাব পরিতোষ ঘোষ। কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ, এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিিভল ডিফেন্স (কুমিল্লা)-এর সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ ইয়াহিয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সুজুকি র‌্যানকন মোটরবাইকস-এর কর্মকর্তাবৃন্দ, ট্রমালিংক-এর কর্মকর্তাবৃন্দ, ট্রমালিংক স্বেচ্ছাসেবক (ফার্স্ট রেসপন্ডার), বিভিন্ন গনমাধ্যমের প্রতিনিধি সহ ৩০০ জন অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্ব পারন করেন ট্রমালিংক-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব অরুপ চন্দ্র সাহা।

ট্রমালিংক-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশন) জনাব বিধান চন্দ্র পাল-এর শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি বলেন,‘ বাংলাদেশে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে যে কোন ভাল কাজ করা সম্ভব। আর ট্রমালিংক তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি ট্রমালিংক-এর সাথে সম্পৃক্ত সকল ম্বেচ্ছাসেবীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ট্রমালিংক-এর পরিচালক (অপারেশন) মিস এশা চৌধুরী বলেন, ট্রমালিংক ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ৮০ কিলোমিটার এলাকায় সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে এ দুটি মহাসড়কে আমরা আমাদের সেবা ২০ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার-এ উন্নীত করেছি। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে আরও প্রতিষ্ঠান ট্রমালিংক-এর কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হবে যাতে ট্রমালিংক তাদের সেবা সারা বাংলাদেশে সম্প্রসারণ করতে পারে। সুজুকি র‌্যানকন মোটরবাইকস-এর প্রতিনিধি জনাব ইব্রাহীম খলিল বলেন, ট্রমালিংক যে কাজ শুরু করেছে. তা এদেশে আরো আগে শুরু হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমরা বিশ্বাস করি যে, ট্রমালিংক এখাতে ভিন্নধারার কাজ নিয়ে এগিয়ে আসবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব পরিতোষ ঘোষ বলেন, ট্রমালিংক মহাসড়কে দূর্ঘটনায় আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি প্রতিষ্ঠানটির উত্তোরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্যান্য বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ট্রমালিংক এক যুগান্তকারী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি এই কাজে প্রশাসন সহ সমাজের সকল স্তরের জনগণের সহযোগিতা পাচ্ছে। বক্তারা বলেন, ট্রমালিংক-এর কার্যক্রম এদেশের মানুষের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ। তারা বলেন, ট্রমালিংক-এর কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজ নিয়ে অনেকেই এগিয়ে আসবেন।

উল্লেখ্য যে, সড়ক দূর্ঘটনায় আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদানে ‘ট্রমালিংক ট্রাস্ট’ বাংলাদেশ-এর প্রথম এবং একমাত্র সংস্থা। স্থানীয় জনগনের সহায়তায় এটি স্বেচ্ছাসেবী সেবা প্রদান করে। ট্রমালিংক সেবা মডেলের সার্বক্ষনিক একটি হটলাইন নম্বর ব্যবহার করে এবং স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের তাৎক্ষনিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ সেবা প্রদানের জন্য নিয়োগ করা হয়।

বাংলাদেশ-এর শীর্ষস্থানীয় মোটর বাইক প্রতিষ্ঠান সুজুকি র‌্যানকন মোটরবাইকস, ট্রমালিংক-এর কার্যক্রমমের সাথে একাত্ততা প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, নিরাপদ সড়ক দেশের আটোমোবাইল খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রমালিংক-এর অগ্রযাত্রায় যেকোন ধরনের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তুত রয়েছে।

পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অতিথিগণ নতুন স্বেচ্ছাসেবীদের সনদপত্র বিতরণ করেন।

আরো পড়ুন