খোরশেদ আলমের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব মো. খোরশেদ আলম চান্দিনায় ন্যায় বিচারক হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত  তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে চান্দিনা উপজেলা সদরের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিচারে তার জন্ম। তার পিতা মরহুম হাজী আবদুল মজিদ এলাকার একজন সম্মানিত ব্যক্তি ও সমাজ সেবক ছিলেন। বাবা-মায়ের ৫ পুত্র সন্তান ও ৪ কন্যা সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।

১৯৬৯ সালে মো. খোরশেদ আলম চান্দিনা উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭১ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে তিনি একই কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে লেখা-পড়া করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

১৯৮০ সালে একই উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের ভূইয়া বাড়ীর মরহুম শামছুদ্দিন ভূইয়ার কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পারিবারিক জীবনে তিনি ১ পুত্র সন্তান ও ৪ কন্যা সন্তানের জনক।

১৯৮১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি চান্দিনা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে চান্দিনা উপজেলা বিএনপির একজন নেতার রাজনীতিক দল পরিবর্তনের কারণে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পরলে আলহাজ্ব মো. খোরশেদ আলম চান্দিনা বিএনপির দুর্দিনের কান্ডারী হিসেবে হাল ধরেন। এবছরই তাকে আহবায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

এর আগে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি টানা তিন বার পশ্চিম চান্দিনা (সদর) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যানের পুরষ্কার পান। ১৯৯০ সালে চান্দিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলহাজ্ব মনিরুল হককে ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দেড় বছর পর উপজেলা পরিষদ বিলুপ্ত হয়। সে সময় তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অনেক অসহায় ও নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সুষ্ঠু বিচার করায় উপজেলার ন্যায় বিচারক খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর ড. রেদোয়ান আহমেদ এর সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে রাজনীতি করে ২০০৬ সালে ড. রেদোয়ান আহমেদ বিএনপি ছেড়ে এলডিপি দল গঠন করার পর রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন দুই নেতা। তিনি হাল ধরেন উপজেলা বিএনপির।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে প্রথম বারের মত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন খোরশেদ আলম। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অধ্যাপক আলী আশরাফ থেকে ৫ হাজার ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন খোরশেদ আলম। কর্মী বান্ধব খোরশেদ আলম এর কর্ম তৎপরতায় এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে ২০১০ সালে বিএনপি চেয়ারপার্সন তাকে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সভাপতির দায়িত্ব দেন। পরপর দুই বার সেই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনও করে আসছিলেন তিনি। যার ফলে আগামী নির্বাচনে খোরশেদ আলমই ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন।

আরো পড়ুন