নিমসারে যুবলীগের দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত ৩/৪ জন, আটক ৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসারে মা হার্ডওয়্যার দোকানে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগের দুপক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ৩/৪ জন আহত হয়। সংঘর্ষের জের ধরে প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন যুবলীগের অফিস ভাংচুর করে।মঙ্গলবার দুপুরে নিমসার বাজারের যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় মহাসড়কে গাড়ী চাপায় শরিফ নামের একজন গুরুতর আহত সহ উভয় পক্ষের ৩/৪ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে । খবর পেয়ে বুড়িচং থানা ও দেবপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিমসার বাজারের ‘মা হার্ডওয়ার’ দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে ২০/২৫ দিন আগে ৩ হাজার টাকা চুরি করে ফাহাদ নামের পার্শ্ববর্তী দোকান কর্মচারী। বিষয়টি জানতে পেরে যুবলীগ নেতা আমির হোসেন দোকান মালিক কে জানায়। এ বিষয়ে আমির হোসেন, অহিদ মিয়া ও দোকান মালিক সফিউল্লাহ সহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিচার শালিস হয়। চুরির ঘটনায় জড়িত ফাহাদ কে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে ফাহাদ জরিমানার টাকা আমির হোসেন এর কাছে প্রদান করলেও আমির হোসেন উক্ত টাকা দোকান মালিক কে ফেরত দেয় নাই। বিষয়টি মোকাম ইউ পি মেম্বার ও যুবলীগ সেক্রেটারি মোবারক হোসেনকে জানালে রফিক মেম্বারের ভাই ও মোবারক মেম্বারের মাঝে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। খবর পেয়ে রফিক মেম্বার ও তার দলবল সহ যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে আসেন। তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্র সহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ধাওয়া খেয়ে মহাসড়কে চলন্ত গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয় রফিক মেম্বার সমর্থক শরিফ নামের এক যুবক। আহত শরিফ মিয়াকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীরা। এছাড়াও এসময় উভয়পক্ষের আরে ৪জন আহত হয়েছে। মোকাম ইউনিয়ন যুবলীগ কার্যালয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয় এসময়।

খবর পেয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মনোজ কুমার দে, ওসি তদন্ত মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া, দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশের আই সি আবু ইউসুফ ফসিউজ্জামান, এস আই শাহাদাত হোসেন, এস আই মাইনুদ্দিন সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয় ইউ পি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এবং থানা পুলিশ কর্মকর্তাগন বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করেন। শান্তি শৃঙ্খলার লক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে দুইপক্ষ আবারো উত্তেজিত হয়ে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পরে ।

পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এসময় বুড়িচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৬জন কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটকৃতরা হলো মোকাম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক মোবারক মেম্বার, যুবলীগ নেতা রফিক মেম্বার, আমির হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা ছানাউল্লাহ এবং মা হার্ডওয়ার দোকানের মালিক শফিউল্লাহ।

এবিষয়ে বুড়িচং থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মনোজ কুমার দে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশ সহ বুড়িচং থানা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কোন অবস্থাতেই বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। জনগনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে এবং আইন অমন্যকারী যেই হোক ছাড় দেয়া হবে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঘটনাস্থ থেকে জড়িত ৬জন কে আটক করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

আরো পড়ুন