বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কি নিখোঁজ?

‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিখোঁজ’ শিরোনামের একটি খবরকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ সেল’।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিখোঁজ বলে প্রচার করা হয়। ফ্রান্সের থ্যালাস এলেনিয়া স্পেস কোম্পানি স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এই স্যাটেলাইটের ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রতিদিন সফলভাবে অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

এই খবরটি একটি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব’ বলে নিশ্চিত করে এতে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছে ‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ সেল’।

এরআগে ফেসবুকে খোঁজ করে দেখা যায় এটিএমবিডি২৪.ওয়েবসাইট, এসবি২৪.নিউজ, ডিএলঅনলাইনটিভি.কম, প্রথমবাংলাদেশ.নেট বেশ কিছু ওয়েব পোর্টাল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রসঙ্গত, উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় গত ৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে বুঝে পায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কমিউনেকশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটিড (বিসিএসসিএল) কার্যালয়ে ‘ট্রান্সফার অব টাইটেল’ হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণ আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দেয় স্যাটেলাইট সিস্টেম নির্মাণকারী ফরাসি কোম্পানি তালিস এলিনিয়া স্পেস।

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হকের কাছে ‘ট্রান্সফার অব টাইটেল’ হস্তান্তর করেন তালিস এলিনিয়া স্পেসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জিল অবাদিয়া। পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তা হস্তান্তর করেন বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদের কাছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেমের নকশা তৈরির জন্য ২০১২ সালের মার্চে মূল পরামর্শকের দায়িত্ব পায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল।’ এরপর স্যাটেলাইট সিস্টেম কিনতে ফ্রান্সের তালিস এলিনিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার চুক্তি করে বিটিআরসি। ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।

‘ট্রান্সফার অব টাইটেল’ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আজকের দিন দেশের মানুষের জন্য স্মরণীয় দিন। তলাহীন ঝুড়ি হিসেবে যে দেশ আখ্যায়িত হয়েছিল, সে দেশ এখন স্যাটেলাইটের মালিক, এটি সবার জন্য গর্ব করার বিষয়। তিনি বলেন, এ স্যাটেলাইট কত দিনে লাভজনক হবে বা কতটা সেবা পাওয়া যাবে, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটি বাংলাদেশের একটি অর্জন, একটি গর্বের বিষয়।

বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আজ থেকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রকৃত মালিক হল। ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ যাত্রার শেষ হল এর মাধ্যমে। এ প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা পেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার (সজীব ওয়াজেদ জয়) কাছ থেকে।

তিনি জানান, স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি দেশের মধ্যে ব্যবহার করে বাকি ২০টি বিদেশে ভাড়া দেয়া হবে। আমাদের যে টাকা খরচ হয়েছে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে তা উঠে আসবে। স্টক এক্সচেঞ্জে যাব বলে আশা করি। অন্যদের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ম্যারি আনিক রোর্ডিনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন