বাংলাদেশ গ্যাস আইন অনুযায়ী অবৈধ গ্যাস ব্যবহার এবং শাস্তি সমূহ – মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশ গ্যাস আইন, ২০১০ অনুযায়ী কি কি কারণে গ্ৰাহকের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে এবং অবৈধ গ্যাস ব্যবহার ও এ
সংক্রান্ত অপরাধ সমূহ এবং অপরাধের শাস্তি সমূহঃ

গ্রাহক শ্রেণী
ধারা-৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে গ্যাস ব্যবহারের প্রকৃতি অনুযায়ী গ্যাস ব্যবহারকারী গণের শ্রেণীবিন্যাস হইবে নিম্নরূপঃ

(ক) গৃহস্থালী
(খ) বাণিজ্যিক
(গ) শিল্প
(ঘ) মৌসুমী
(ঙ) সিএনজি
(চ) চা-বাগান
(ছ) বিদ্যুৎ
(জ) সার এবং
(ঝ) ক্যাপটিভ পাওয়ার

(৩) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে গ্যাস সরবরাহ সীমিত অথবা স্থগিত করিবার অথবা গ্রাহকদের গ্যাস ব্যবহারের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করিবার অথবা গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিবার ক্ষমতা লাইসেন্সীর থাকিবে, যদি-

(ক) সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের জীবন এবং সম্পদ বিপদাপন্ন হয়
(খ) গ্যাস নেটওয়ার্ক পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিচালন ত্রুটি দেখা দেয়
(গ) জাতীয় পর্যায়ে গ্যাসের সংকট দেখা দেয়
(ঘ) বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করা হয়
(ঙ) গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার ঘটে অথবা
(চ) গ্যাস মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপ অথবা বাইপাস লাইনের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করা হয়
(ছ) গ্যাস বিতরণে ব্যবহারকারীগণের মধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণের প্রয়োজন হইলে
(জ) সরকার/কমিশন/কোম্পানী কর্তৃক নির্ধারিত দক্ষতার (efficiency) চাইতে কম দক্ষতায় গ্যাস ব্যবহৃত হয়।

ধারা-৮। (২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সিএনজি, এলপিজি ও এলএনজি সরবরাহ সীমিত, স্থগিত কিংবা সীমাবদ্ধতা আরোপ করিবার ক্ষমতা কমিশনের থাকিবে, যদি-

(ক) সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের জীবন ও সম্পদ বিপদাপন্ন হয়
(খ) অননুমোদিতভাবে সিএনজি এর ব্যবহার প্রমাণিত হয়।

(৩) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সিএনজি সরবরাহ সীমিত, স্থগিত কিংবা সীমাবদ্ধতা আরোপ করিবার ক্ষমতা গ্যাস বিতরণকারীর থাকিবে, যদি-

(ক) গ্যাস নেটওয়ার্কে পরিচালন বিপত্তি ঘটে;
(খ) জাতীয় পর্যায়ে গ্যাসের স্বল্পতা দেখা দেয়।

অপরাধ ও শাস্তি
ধারা -১০।
(১) কোন গৃহস্থালী গ্রাহক অথবা বাণিজ্যিক গ্রাহক অথবা শিল্প, মৌসুমী বা ক্যাপটিভ পাওয়ার বা সিএনজি স্টেশন বা চা বাগান শ্রেণীভুক্ত গ্রাহক অথবা বিদ্যুৎ ও সার শ্রেণীভুক্ত গ্রাহকের নিম্নবর্ণিত যে কোন কাজ হইবে একটি অপরাধ, যথাঃ-

(ক) মিটারকে পাশ কাটাইয়া সরবরাহ লাইন ও অভ্যন্তরীণ লাইনের মধ্যে সরাসরি বা প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন করিয়া গ্যাস ব্যবহার করা
(খ) মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপ করিয়া উহার ইনডেক্স, সীল, রোটর বা ফ্যান ভাঙ্গিয়া, অথবা উহার ডায়াফ্রাম বা ইনডেক্স ছিদ্র করিয়া, অথবা বিপরীতমুখী মিটার স্থাপন করিয়া, অথবা মিটারের যান্ত্রিক ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করিয়া গ্যাসের প্রকৃত ব্যবহার হইতে কম প্রদর্শন করা
(গ) সরবরাহ লাইন হইতে অবৈধ সংযোগ স্থাপন করিয়া গ্যাস ব্যবহার করা
(ঘ) গ্যাস সংযোগ সংক্রান্ত কোন শর্ত ভঙ্গের কারণে গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্নকরণের পর অননুমোদিত বা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা
(ঙ) গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্থাপনকৃত রেগুলেটর অননুমোদিতভাবে বা অবৈধভাবে পুনঃস্থাপন (re-set) করিয়া নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে গ্যাস ব্যবহার করা
(চ) অনুমোদিত সংখ্যার অতিরিক্ত, বা অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন, গ্যাস সরঞ্জাম স্থাপনপূর্বক গ্যাস ব্যবহার করা
(ছ) গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষের পরিত্যক্ত রাইজার হইতে অননুমোদিত বা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ গ্রহণ করিয়া গ্যাস ব্যবহার করা; এবং
(জ) দফা (ক) হইতে (ছ) এ বর্ণিত পন্থা ব্যতীত অন্য কোন পন্থায় অননুমোদিত বা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন অপরাধের দায়ে-

(ক) কোন গৃহস্থালী গ্রাহক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদন্ডে বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে উক্ত ব্যক্তি অন্যূন ৩ (তিন) মাস এবং অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে এবং অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;
(খ) কোন বাণিজ্যিক গ্রাহক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যুন ৬ (ছয়) মাস এবং অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ৪০ (চল্লিশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;
(গ) কোন শিল্প, মৌসুমী বা ক্যাপটিভ পাওয়ার বা সিএনজি স্টেশন বা চা বাগান শ্রেণীভুক্ত গ্রাহক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ্য টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ্য টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন; এবং
(ঘ) কোন বিদ্যুৎ ও সার শ্রেণীভুক্ত গ্রাহক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ্য টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যুন ২ (দুই) বৎসর এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

অননুমোদিত উদ্দেশ্যে গ্যাস ব্যবহারের দন্ড
ধারা-১১।(১) কোন গৃহস্থালী গ্রাহক তাহার গৃহস্থালী সংযোগ হইতে অননুমোদিত বা অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ব্যবহার করিলে, তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদন্ডে বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ৩ (তিন) মাস এবং অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে এবং অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন-

(ক) ক্যাপটিভ পাওয়ার শ্রেণীভুক্ত গ্রাহক তাহার অনুমোদিত সংযোগ হইতে অননুমোদিত বা অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে বা গৃহস্থালী কাজে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ব্যবহার করিলে, বা

(খ) সিএনজি শ্রেণীভুক্ত গ্রাহক তাহার অনুমোদিত সংযোগ হইতে অননুমোদিত বা অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে বা গৃহস্থালী কাজে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা বিদু্যৎ উৎপাদনে গ্যাস ব্যবহার করিলে, তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ্য টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস এবং অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

লাইসেন্সীর অনুমতি ব্যতীত গ্যাস লাইন স্থাপন, ইত্যাদির দন্ড

ধারা-১২। (১) কোন ব্যক্তি কোন লাইসেন্সীর কোন গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক হইতে তাহার লিখিত সম্মতি ব্যতিরেকে অবৈধ পন্থায় গ্যাস আহরণের নিমিত্ত কোন লাইন স্থাপন বা গ্যাস সংযোগ গ্রহণ করিলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যুন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন গ্রাহক লাইসেন্সীর লিখিত সম্মতি ব্যতিরেকে যে উদ্দেশ্যে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হইয়াছে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে গ্যাস ব্যবহার করিলে বা অনুমোদিত গ্যাস স্থাপনার মাধ্যমে নির্ধারিত মাসিক লোড হইতে বেশী হারে গ্যাস ব্যবহার করিলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

(৩) কোন ব্যক্তি কনডেনসেট পাইপ লাইনে অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বা অন্য কোন ভাবে কনডেনসেট চুরি করিলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যুন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

লাইসেন্স ব্যতিরেকে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন বা যানবাহন সিএনজিতে রূপান্তর কারখানা স্থাপন, ইত্যাদির দন্ড

ধারা-১৩। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ব্যতিরেকে-

(ক) কোন সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন বা যানবাহন সিএনজিতে রূপান্তর কারখানা স্থাপন করিলে, বা
(খ) অনুমোদিত পদ্ধতি ব্যতীত পেট্রোল বা ডিজেল চালিত কোন গাড়ী সিএনজি গাড়ীতে রূপান্তর, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করিলে, বা
(গ) নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে সিএনজি ব্যবহার করিলে,

উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অনূ্যন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন কর্তৃক নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে সিএনজি বিক্রয়ের দন্ড

ধারা-১৪। কোন সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে অথবা মিটার টেম্পারিং করিয়া সিএনজি বিক্রয় করিলে, রিফুয়েলিং স্টেশনের স্বত্তাধিকারী বা সংশিস্নষ্ট দায়ী ব্যক্তি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অনূ্যন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ২(দুই) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডে এবং অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

নাশকতামূলক কার্যের দন্ড

ধারা-১৫। কোন ব্যক্তি কনডেনসেট, সিএনজি, এলপিজি শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা গ্যাস সিস্টেম পরিচালন ব্যবস্থায় বা গ্যাস শিল্পের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোন ধ্বংসাত্মক বা নাশকতামূলক কার্য সংঘটন করিলে, তিনি অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে অন্যুন ৩(তিন) বৎসর এবং অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডে এবং অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির দন্ড

ধারা-১৬। কোন গ্রাহক গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি হিসাবে কর্তব্যরত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে গ্রাহক আঙ্গীনায় প্রবেশে বাধা প্রদান করিলে বা গ্যাস সংযোগ স্থান বা উহার সরঞ্জামাদি পরিদর্শনে বাধা প্রদান করিলে বা গ্রাহক আঙ্গীনায় তাহাকে আটকাইয়া রাখিলে, তিনি অনধিক ১(এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ১(এক) বৎসর এবং অনধিক ২(দুই) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডে এবং অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

পাইপলাইন, মিটার, রেগুলেটর, ইত্যাদি চুরির দন্ড

ধারা-১৭। কোন ব্যক্তি গ্যাস সঞ্চালন, বিতরণ এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পাইপলাইন, মিটার, রেগুলেটর বা অন্য কোন সামগ্রী চুরি বা ইচ্ছাকৃতভাবে উহাদের কোন ক্ষতিসাধন করিলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যুন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

চুরিকৃত সামগ্রী ক্রয় বিক্রয় ও দখলে রাখিবার দন্ড

ধারা-১৮। কোন ব্যক্তি গ্যাস পাইপলাইন, মিটার, রেগুলেটর বা অন্য কোন সামগ্রী চুরিকৃত জানিয়া বা উহা চুরি করা হইয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিবার যথেষ্ট কারণ থাকা সত্ত্বেও উহা ক্রয়-বিক্রয় বা উহা দখলে রাখিলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলে তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা, ইত্যাদির দন্ড

ধারা-১৯। কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন যে কোন অপরাধ সংঘটনে, প্রত্যক্ষ বা পরো্ক্ষ, সহায়তা করিলে, বা উক্ত অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা বা ষড়যন্ত্র করিলে এবং উক্ত সহায়তা বা ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হইলে, উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাকারী তাহার সহায়তা, ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনা দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
এই আইনের অধীন দন্ডিত হইবার কারণে গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারীর পাওনা অর্থ পরিশোধের দায়-দায়িত্ব ব্যাহত বা ক্ষুন্ন না করা

ধারা-২০। (১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধে দন্ডিত হইবার কারণে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট গ্যাস বিতরণকারী বা সরবরাহকারী কর্তৃক দাবীকৃত পাওনা অর্থ পরিশোধের দায়-দায়িত্ব ব্যাহত বা ক্ষুন্ন করিবে না।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পাওনা অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে গ্যাস বিতরণকারী অথবা সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিকার দাবী করিয়া দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের অথবা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No.III of 1913) এর অধীন সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা যাইবে।

বিচার

ধারা-২১। (১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কতৃর্ক বিচার্য হইবে।

(২) এই আইনে ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII তে বর্ণিত পদ্ধতি, প্রযোজ্য হইবে।

ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ

ধারা-২২। এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধান সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যে কোন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।

অর্থদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা

ধারা-২৩। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোন দন্ড আরোপ করিতে পারিবে।

নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে বিবাদমান উভয় পক্ষের শুনানী গ্রহণ

ধারা-২৪। Code of Civil Procedure, 1908 (Act V of 1908) কিংবা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, কোন পক্ষের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করা হইলে, সেই পক্ষকে যথাযথ নোটিশ প্রদানপূর্বক শুনানীর সুযোগ প্রদান ব্যতিরেকে মামলায় কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা অথবা নিষেধমূলক আদেশ প্রদান করা যাইবে না।

অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা

ধারা-২৫। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপোষযোগ্য হইবে।

সালিশীর মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি

ধারা-২৬। এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, লাইসেন্সীদের মধ্যে অথবা গ্রাহক ও লাইসেন্সীর মধ্যে কোন বিরোধের উদ্ভব হইলে, সালিশ আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ১নং আইন) অথবা পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির বিধান অনুযায়ী কমিশন উহা নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।

মোঃ কামাল হোসেন
সহকারী ব্যবস্থাপক (আইন)
বিজিডিসিএল, কুমিল্লা।

আরো পড়ুন