বিদ্যুৎ আইন অনুসারে কোন কাজগুলো অপরাধ এবং তার শাস্তি কি: মোঃ কামাল হোসেন

সভ্যতার ইতিহাসে বিদ্যুৎ আবিষ্কার ও এর ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিদ্যুৎ আমাদের সভ্যতার উন্নয়নে একটি বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের ব্যবহার বহুবিধ। বিদ্যুৎ আমাদের জীবনযাপনকে উন্নত করেছে। বাংলাদেশ সরকার দেশের সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে যা আমাদের জীবন যাত্রার মানকে উন্নত করেছে। তবে কিছু দুষ্কৃতকারীরা দেশের এই জাতীয় সম্পদকে বিভিন্ন ভাবে অপচয় করে । এর জন্য বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা ও এর অপব্যবহার রোধ করার জন্য একটি আইন প্রনয়ন করেছে যা বিদ্যুৎ আইন ২০১৮ নামে পরিচিত।
‌আসুন জেনে নিই এই আইন অনুযায়ী কোন ধরণের কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তার শাস্তি কি-

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ:-

ধারা-১৮। (১) কোন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ব্যর্থ হইলে অথবা কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করিলে, লাইসেন্সি নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক উক্ত গ্রাহক বা ব্যক্তির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হইলে কোন আদালত লাইসেন্সিকে উক্ত গ্রাহকের বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগ করিবার জন্য আদেশ দিতে পারিবে না।

(৩) বিদ্যুৎ বিল প্রণয়ন ও আদায়ের সহিত সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কর্মচারীর দায়িত্বে অবহেলার কারণে কোন বিল অনাদায়ী থাকিলে উহার দায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কর্মচারীর উপর বর্তাইবে।

বিদ্যুৎ চুরির দণ্ড:- ধারা-৩২
(১) কোন ব্যক্তি বাসগৃহ বা কোন স্থানে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ চুরি করিলে অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা চুরিকৃত বিদ্যুতের মূল্যের দ্বিগুণ অথবা ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি শিল্প ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ চুরি করিলে অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা চুরিকৃত বিদ্যুতের মূল্যের দ্বিগুণ অথবা ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

কৃত্রিম পদ্ধতি স্থাপনের দণ্ড:-

ধারা-৩৩। (১) কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে লাইসেন্সির বিদ্যুৎ সংযোগে কোন যন্ত্র, ডিভাইস বা কৃত্রিম পদ্ধতি স্থাপন বা ব্যবহার করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) যদি কোন বাসগৃহে কোন যন্ত্র, ডিভাইস বা কৃত্রিম পদ্ধতি স্থাপনের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে লাইসেন্সির বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ, ভোগ বা ব্যবহৃত হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হয়, তাহা হইলে ভিন্নরূপ কিছু প্রমাণিত না হইলে, উক্ত চত্বরের দখলদার উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
বিদ্যুৎ অপচয় করিবার দণ্ড:-
ধারা-৩৪। কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ অপচয় করিলে বা বিদ্যুতের সরবরাহ ঘুরাইয়া দিলে অথবা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করিবার উদ্দেশ্যে কোন বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বা পূর্তকর্ম কাটিয়া দিলে বা ক্ষতিগ্রস্ত করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড বা ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চুরি, অপসারণ বা বিনষ্ট করিবার দণ্ড:-
ধারা-৩৫। কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা উপকেন্দ্র বা স্থাপনার কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি অথবা বিদ্যুৎ লাইন সামগ্রী, যেমন-পোল, টাওয়ারের অংশ বিশেষ, কন্ডাক্টর, ট্রান্সফরমার, বৈদ্যুতিক তার, ইত্যাদি চুরি, অপসারণ, বিনষ্ট বা ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিসাধন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অন্যূন ২ (দুই) বৎসর এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড এবং অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

চুরিকৃত মালামাল দখলে রাখিবার দণ্ড:-

ধারা-৩৬। কোন ব্যক্তি ধারা ৩৫ এ উল্লিখিত যন্ত্রপাতি বা বিদ্যুৎ লাইন সামগ্রী চুরি হইয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা সত্ত্বেও উক্ত চুরিকৃত মালামাল নিজ দখলে রাখিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অবৈধ, ত্রুটিযুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করিবার দণ্ড:-
ধারা-৩৭। কোন লাইসেন্সি-

(ক) ধারা ২৬ এর বিধান সাপেক্ষে, সরবরাহ এলাকার বাহিরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করিলে বা কোন বিদ্যুৎ লাইন বা পূর্তকর্ম স্থাপন করিলে;

(খ) এই আইন বা বিধির কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করিলে; অথবা

(গ) ত্রুটিযুক্ত বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করিলে;

উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত লাইসেন্সি অথবা অপরাধ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

মিটার, পূর্তকর্মে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং বিদ্যুতের অননুমোদিত ব্যবহারের দণ্ড:-

ধারা-৩৮। কোন ব্যক্তি-

(ক) লাইসেন্সির লিখিত অনুমতি ব্যতীত বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সহিত মিটার সংযোগ স্থাপন করিলে বা বিচ্ছিন্ন করিলে অথবা অন্য কোন স্থাপনার সহিত যোগাযোগ রক্ষার্থে কোন যন্ত্র স্থাপন করিলে;

(খ) লাইসেন্সির লিখিত অনুমতি ব্যতীত মিটার হইতে অন্য কোন ব্যক্তিকে পার্শ্ব সংযোগ প্রদান করিলে;

(গ) মিটারের ক্ষতিসাধন করিলে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে বা প্রতারণামূলকভাবে মিটারের ইনডেক্স পরিবর্তন করিলে অথবা উহাদের যথাযথ রেজিস্টারে বাধার সৃষ্টি করিলে; অথবা

(ঘ) লাইসেন্সি কর্তৃক সরবরাহকৃত বিদ্যুতের উচ্চতর হার পদ্ধতির পরিবর্তে নিম্নতম হার পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করিলে বা কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করিলে;

উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

বিদ্যুৎ স্থাপনা অনিষ্ট সাধনের দণ্ড:-

ধারা-৩৯। (১) কোন ব্যক্তি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, বিদ্যুৎ লাইন, খুঁটি বা অন্যবিধ যন্ত্রপাতি নাশকতার মাধ্যমে ভাঙ্গিয়া ফেলিলে বা ক্ষতিগ্রস্ত করিলে বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করিবার উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বা যন্ত্রের উপর কোন বস্তু নিক্ষেপ করিলে বা রাখিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অন্যূন ৭(সাত) বৎসর এবং অনধিক ১০(দশ) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০(দশ) কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি লাইসেন্সির অনুমতি ব্যতিরেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, বিদ্যুৎ লাইন, খুঁটি বা অন্যবিধ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করিলে অবহেলাবশত ভাঙ্গিয়া ফেলিলে বা ক্ষতিগ্রস্ত করিলে বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করিবার উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বা যন্ত্রের উপর কোন বস্তু নিক্ষেপ করিলে বা রাখিলে তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অন্যান্য অপরাধের দণ্ড:-

ধারা-৪০। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনে সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডের বিধান উল্লেখ নাই এইরূপ কোন বিধান অথবা বিধির কোন বিধান লঙ্ঘন করেন তাহা হইলে তিনি অনধিক ৬(ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০(দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অপরাধ সংঘটনে সহায়তার দণ্ড:-

ধারা-৪১। কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা, ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনা করিলে এবং উক্ত সহায়তা, ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হইলে, উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী তাহার সহায়তা, ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনা দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্দিষ্টকৃত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অপরাধ সংশ্লিষ্ট বস্তু বাজেয়াপ্ত:-

ধারা-৪২। এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত যে কোন যন্ত্র, বস্তু, বা উপকরণ সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে।

বিদ্যুৎ কর্মচারীদের অপরাধের দণ্ড:-

ধারা-৪৩। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন বা বিতরণ কাজে নিয়োজিত কোন সরকারি অথবা বেসরকারি কোন সংস্থা, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মচারী এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ করেন বা অপরাধ সংঘটনের সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকেন বা অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনা প্রদান করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্দিষ্টকৃত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

একই অপরাধ পুনরায় সংঘটনের দণ্ড:-

ধারা-৪৪। কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইবার পর পুনরায় একই অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

দণ্ডাদেশ অন্য দায়কে হ্রাস করিবে না:-

ধারা-৪৫। এই আইনের অধীন আরোপিত অর্থদণ্ড ক্ষতিপূরণ প্রদানের অতিরিক্ত হইবে এবং ইহা দণ্ডিত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ প্রদানের দায়কে হ্রাস করিবে না।

মামলা দায়ের:-
ধারা-৪৭। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন আদালত লাইসেন্সির নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বা সমপদমর্যাদার কর্মচারী কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগ ব্যতীত এই আইনের অধীন কোন অভিযোগ আমলে গ্রহণ করিবে না।

কতিপয় মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে করণীয়:-

ধারা:-৪৮। (১) এই আইনের অন্য কোন বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, কোন ব্যক্তি বা গ্রাহক কর্তৃক বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা অবগত হইবার পর লাইসেন্সি তাৎক্ষণিকভাবে তাহার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করিবে এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করিবার ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে অধিক্ষেত্র সম্পন্ন আদালতে লিখিতভাবে অভিযোগ করিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, গ্রাহক অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তি চুরিকৃত বিদ্যুতের মূল্যের ৩ (তিন) গুণ অর্থ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, লাইসেন্সি কর্তৃক সরবরাহকৃত মিটারের মূল্য, বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও পুনঃসংযোগ ফি এবং প্রযোজ্য অন্যান্য ফি, যদি থাকে, পরিশোধ করেন এবং লাইসেন্সির নিকট উপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হইলে, মামলা দায়ের হইতে বিরত থাকিতে পারিবে এবং অর্থ পরিশোধের ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ প্রদান করিতে পারিবে :

আরো শর্ত থাকে যে, এই বিধান অভিযুক্ত ব্যক্তি বা গ্রাহকের শুধুমাত্র প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে বিবেচনাযোগ্য হইবে।

(২) অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী ব্যক্তি এই আইনের অধীন তাহার বিরুদ্ধে গৃহীত কোন কার্যক্রম সম্পর্কে কোন দেওয়ানি বা ফৌজদারি আদালতে মামলাদায়ের করিতে পারিবে না।

বিচার:-
ধারা:-৪৯। (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

(২) ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন-

(ক) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে ;

(খ) প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে বর্ণিত যে কোন অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা:-
ধারা-৫০। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৩৩, ৩৫, ৩৮ এবং ৩৯ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, অ-জামিনযোগ্য এবং অ-আপোষযোগ্য হইবে এবং ধারা ৩২, ৩৪, ৩৬, ৩৭ এবং ৪০ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য এবং আপোষযোগ্য হইবে।

মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর প্রয়োগ:-

ধারা-৫১। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, উক্ত আইনের তফসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন:-

ধারা-৫২। (১) কোন কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পনির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোন কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত সত্ত্বা হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে এই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।

বিরোধ নিষ্পত্তি:-
ধারা-৫৩। বিদ্যুৎ সরবরাহ বা ব্যবহার সংক্রান্ত উদ্ভূত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কমিশন আইন প্রযোজ্য হইবে।

বকেয়া অর্থ আদায়:-
ধারা-৫৪। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন, দলিল বা চুক্তিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন গ্রাহকের নিকট বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য মূল্য বা অন্য কোন অর্থ বকেয়া থাকিলে উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Bengal Act, No. III of 1913) এর বিধান অনুসারে সরকারি পাওনা হিসাবে আদায় করা যাইবে।

আসুন জাতীয় সম্পদ বিদ্যুৎ সঠিক ভাবে ব্যবহার করি ও অপচয় রোধ করি।

মোঃ কামাল হোসেন,
সহকারী ব্যবস্থাপক (আইন),
বিজিডিসিএল, কুমিল্লা।

আরো পড়ুন