মুরাদনগরে গোমতীতে অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ এলাকায় গোমতী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে মাসের পর মাস একটি প্রভাবশালী চক্র অবাধে বালু ও মাটি তুলে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে নদী তীরের ফসলী জমিসহ নদীর প্রতিরক্ষাবাঁধের উপর দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কটি হুমকীর মুখে পড়েছে। পাশাপাশি অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার বালূ ও মাটি বিক্রি করলেও সরকার বি ত হচ্ছে বিপুল রাজস্ব আদায় থেকে।

সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্রে জানা যায়, জেলার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গোমতী নদী। এই নদীতে বিগত এক বছরেরও বেশী সময় ধরে ড্রেজার বসিয়ে একটি চক্র অবাধে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে। সুত্র আরো জানায়, সরকারীভাবে কোন বৈধতা না থাকলেও ড্রেজারে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় হুমকীর মুখে পড়েছে নদী তীরের ফসলী জমি ও বাঁধের উপর দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কটি। এই চক্রটি বাঁধের রাস্তাটির উপর লোহার পাইপ বসিয়ে নদীর উত্তরপাশে বিভিন্নস্থানের নীচু জমিসহ বিভিন্ন জলাশয়,বাসা-বাড়ির কাজে বালু ও মাটি নিয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো কোথাও কোথাও বালু’র স্তুপ করে সেখান থেকে অন্যত্রও বিক্রি করছে।

উত্তর ত্রিশ ও আশপাশ এলাকার একাধিক ব্যক্তি পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, উত্তর ত্রিশ গ্রামের রুক মিয়ার ছেলে মুরাদনগর উপজেলা যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার কিছু সহযোগী দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছে। নদীর দক্ষিণপাড় ঘেষে ড্রেজার মেশিনটি পাহাড়ায় থাকে জাহাঙ্গীরের নিজস্ব লোকজন। ড্রেজার পাহাড়ায় থাকে সবসময় ৪/৫ জন লোক। তাদের প্রভাবের কারণে ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেনা। এদিকে অবাধে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে নদীর চর এলাকার মাটি ক্রমাগত ভেঙ্গে পড়ায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক কৃষক চাষাবাদ থেকে বি ত হচ্ছে। একইভাবে প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কটিও রয়েছে এখন হুমকীর মুখে।

মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউপি’র চেয়ারম্যান মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, নদীতে যে ড্রেজার মেশিনটি চালু রয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। বিভিন্ন সময়ে রেজ্যুলেশন করা হয়েছে উপজেলা সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে নদীতে ড্রেজার চলতে পারবেনা বলে। তবুও প্রভাব খাটিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বালু ও মাটি উত্তোলনে চরের জমি ভেঙ্গে কৃষকের ফসলী জমি নষ্ট হওয়ায় চাষাবাদ করতে পারছেনা অনেক কৃষক পরিবারের লোকজন। বিষয়টি জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এটার অনুমতি দিতে পারিনা।

আরো পড়ুন