যে নদীতে মোশতাক গোসল করতো সেটির নামে কীভাবে বিভাগ হয়: বাহার

যে মেঘনা নদীতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি মোশতাক (খন্দকার মোশতাক আহমেদ) গোসল করতো সেটির নামে কীভাবে বিভাগ হয় জানতে চেয়েছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার। শনিবার (৮ অক্টোবর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) কুমিল্লার ২৫তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রশ্ন করেন তিনি।

বাহার বলেন, যেখানে বঙ্গবন্ধুর খুনি মোশতাক গোসল করতো, সে নদীর নামে কীভাবে কুমিল্লা বিভাগ হয়? এই কুমিল্লার অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। ১৫০০ বছর আগে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। কুমিল্লার সন্তান বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পার্লামেন্টে মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে কথা বলেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। তিনি জীবন দিয়ে এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বেগম রোকেয়ার জন্মের সাত বছর আগে নবাব ফয়জুন্নেছা নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় এখানে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ অঞ্চলের সন্তান শচীন দেব বর্মণের গান ভারতবর্ষে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। কুমিল্লা আদালতে ১৮৬৭ সালে প্রথম বাংলায় রায় দেওয়া হয়। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা ভেবে বিভাগের নাম কুমিল্লাই দিন।

এ সংসদ সদস্য বলেন, আপনারা (ইঞ্জিনিয়াররা) আমলাদের বিরুদ্ধে দুঃখের কথা বলেছেন। তাদের কথা কি বলবো? ঢাকা শহরের আমলারা নিজেদেরকে এমপি বাহারের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার মনে করেন!

তিনি বলেন, আমেরিকায় নির্বাচন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পও হতাশ। তিনি ফলাফল মেনে নিতে চাননি। সেখানে আনকনটেস্টে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) এক তৃতীয়াংশ প্রার্থী নির্বাচিত হন। বাংলাদেশে ইঞ্জিনিয়ার সবুর (অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আবদুস সবুর) আনকনটেস্টে জিতলে সমস্যা?

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনাদের সবাইকে মিলে প্রধানমন্ত্রীকে পাহারা দিতে হবে। শেখ হাসিনার কিছু হলে বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত যেসব স্বপ্ন দেখে গেছেন, তা বাস্তবায়ন করেছেন শেখ হাসিনা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে বিদেশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার মাটি ও মানুষ থাকলেই চলবে। সেই মাটি ও মানুষকে কাজে লাগিয়ে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শেখ হাসিনার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) কুমিল্লার সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি’র সাবেক সভাপতি মো. নুরুল হুদা, অধ্যাপক ড. এম. শামীম জেড বসুনিয়া, মো. আব্দুস সবুর এবং বর্তমান সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন শিবলু। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আইইবি কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক মো. মীর ফজলে রাব্বী। আলোচনা সভা শেষে দুটি সেমিনার, বার্ষিক সাধারণ সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন