স্ত্রীকে হত্যা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

স্ত্রীকে ‘পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরে’ ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ঝালকাঠি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলী ইমাম খান অনুকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, আল ইমাম খান অনু (সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঝালকাঠি জেলা শাখা)কে তার কৃতকর্মের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

পরকীয়া প্রেমের জেরে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন স্বামী আলী ইমাম খান অনু (৩০)। সোমবার সকাল ১০টার দিকে প্রস্তাবিত ইকোপার্কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অনু শহরের ইছানীল (৭ নম্বর ওয়ার্ড) এলাকার দিদার হোসেন খানের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি। আর নিহত সায়মা পারভিন এ বছর ঝালকাঠি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ঝালকাঠি শহরের ফকিরবাড়ি এলাকার দলিল লেখক দিদার হোসেন নান্নার ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর গোপনে বিয়ে করেন প্রতিবেশী সায়মা পারভীন তানহাকে। বিয়ের পরে তারা আলাদাভাবে নিজের বাবার বাসায় থাকতেন। সম্প্রতি মেয়েটি ফেসবুকে অন্য এক যুবকের সঙ্গে চ্যাট করতেন। বিষয়টি জানতে পারে অনু রবিবার রাতে নিজের ফেসবুকে স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত লিখে স্ট্যাটাস দেন।

সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্ত্রীকে ফোনে ইকো পার্কে ডেকে আনেন অনু। এরপর ফেসবুকের স্ট্যাটাস ও চ্যাটিং নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অনু ছুরি দিয়ে পেটে ও বুকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তানহার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে অনু তার ফেসবুকে বেলা ১২টার দিকে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ ও ছুরি উদ্ধার করে।

অনু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমার বউ পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছিল, তাই নিজেই তাকে খুন করেছি। এর জন্য আমি ছাড়া আর কেউ দায়ী নয়।’

অপর একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতক বেঈমানের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। পরপারে ভালো থেকো বউ, পরকীয়ার মজা এইবার অন্তত বুঝলা।’

আরো পড়ুন