ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল বৃহত্তর কুমিল্লার (কুমিল্লা,ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়াও চাঁদপুর) লাখো রোগীর ভরসাস্থল। বৃহত্তর এ হাসপাতালে নেই তথ্য কেন্দ্র। ফলে নতুন রোগীদের জন্য টিকেট কাউন্টার, ডাক্তারের কক্ষ, বিভিন্ন ওয়ার্ড, বিভিন্ন বিভাগ খুঁজে বের করা কষ্টের কাজ। এ জন্য প্রতিনিয়ত নতুন আগন্তুকদের পড়তে হয় দালালদের খপ্পরে।
কুমেক হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, হাসপাতালের ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র দেয়া হয়েছে পুরাতন ভবনের এমন এক কর্নারে, যা প্রথম কেউ হাসপাতালে গেলে তার জন্য খুঁজে বের করা মুশকিল। হাসপাতালের ওষুধ সরকারিভাবে দরিদ্র রোগীদের জন্য বিনামূল্যে দেয়ার কথা থাকলেও তা তারা পাচ্ছে না। রোগীরা ডাক্তারের নিকট কাকুতি মিনতি করে সরকারি ওষুধের স্লিপ নেন। প্রায় সময় দেখা যায়, ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র সে ওষুধ নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের ২১৬ নম্বর কক্ষের ওয়ার্ড বয়ের নিকট রয়েছে কয়েক বান্ডেল ওষুধ বিতরণের টোকেন, যে কাগজে ডাক্তারের সিল দেয়া আছে।
হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারীরা সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তারা দামী ওষুধগুলোর নাম লিখে ডাক্তারের স্বাক্ষর নকল করে বা যে কোনো ডাক্তার থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে, সরকারি ওষুধ বাইরের যে কোনো ফার্মেসিতে বিক্রি করেন।
সাম্প্রতিক বহির্বিভাগের এক চিকিৎসককে দেখা যায়, ধারাবাহিকভাবে একাধিক কর্মচারীর স্লিপে ওষুধের অনুমোদন দিতে। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনে ওষুধ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যায়। আর কেউ অতিরিক্ত ওষুধ নিয়ে বাইরে বিক্রি করে।
ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া টোকেনে অতিরিক্ত ওষুধ কেন দেয়া হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার বলেন, হাসপাতালের স্টাফরা একটু বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। আগে ওষুধ নিয়ে বাসায় রেখে দেয়, যখন প্রয়োজন হয়, তখন খায়।
জানা যায়, বাহিরের অসহায় দরিদ্র রোগীরা যখন প্রয়োজনীয় ওষুধ চেয়ে না পেয়ে কাউন্টারের সামনে ঘুরাঘুরি করে তখন হাসপাতালের কতিপয় স্টাফদের নিয়োগকৃত দালালরা সহানুভূতির অভিনয় করে তাদেরকে বলে কিছু টাকা দেন আমি বাহির থেকে কম দামে আপনার জন্য ওষুধ নিয়ে আসছি। তখন নিরুপায় দরিদ্র রোগীর স্বজনরা দালালদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুমিল্লা নগরীর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বলেন, আমি আমার কাজের মেয়েকে নিয়ে গত ১০ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। ডাক্তার দেখিয়ে যখন স্লিপ নিয়ে ওষুধের কাউন্টারে যাই তখন বলা হয় এই ওষুধ গুলোতে এখানে নেই। আপনাদের বাহির থেকে কিনতে হবে। পরক্ষনেই ২০/২২ বছরের এক জিন্স প্যান্ট পরিহিত ছেলে এসে বলল, আন্টি, যদি অল্প কিছু টাকা দেন তাহলে আমি ম্যানেজ করে দিতে পারব। কোনো উপায় না দেখে ৫০ টাকার বিনিময়ে তার কাছ থেকে আমি ওষুধগুলো সংগ্রহ করি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারি জানান, ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কারো অগ্রিম ওষুধ দেয়ার বা নেয়ার অধিকার নেই। এটা অন্যায়। আমরা খোঁজ নিয়ে প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
সূত্রঃ মানব কণ্ঠ
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com