ডেস্ক রিপোর্টঃ উজহানের পাহাড়ী ঢল আর ভারী বর্ষণের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে গোমতী নদীর পানি। গত দু’দিনের ভারী বর্ষণের পাশাপাশি উজানের ঢলে গোমতীর চরের হাজার একর গ্রীষ্মকালীন সবজি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার। পানি বেড়ে এখন বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদীর দুই তীর উপচে পানি প্রবাহিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
গোমতী নদীর আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া,রত্নাবতী,চাঁনপুর,টিক্কারচর এবং বুড়িচং উপজেলার বালিখাড়া,কামাড়খাড়া, শ্রীপুর ও গোবিন্দপুর অংশে ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দু’দিন ভোর রাতে ও সকালে ভারি বর্ষণ এবং সীমান্তবর্তী ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে গোমতীর চর ডুবে যায়। এতে সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকা কোটি টাকার গ্রীষ্মকালীন চাল কুমড়ো,ঢেড়শ,বরবটি,করলা ,কাকরোল,পুইশাকসহ শতাধিক হেক্টর বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়।
গোমতীর আদর্শ সদর উপজেলার শাহাপুর এলাকার কৃষক আবদুল মজিদ,মোতালেব হোসেন,বাতেন মিয়া জানান,গত দুই দিনের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে চরে তাদের উৎপাদিত করলা,ঢেড়শ,বরবটির খেত পানির নীচে তলিয়ে গেছে।
বুড়িচং উপজেলার কামাড়খাড়া,বালিখাড়া ষোলনল,শ্রীপুর,গোবিন্দপুর এলাকার অন্তত কুড়িজন সবজি চাষি জানান, চরে তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি সংগ্রহের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সংগ্রহের আগেই পানিতে তলিয়ে গেল।
বালিখাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওবায়েদ নামে এক সবজি চাষি বাঁশের ঝুড়ি নিয়ে পানি ঠেলে চরের মধ্যে থেকে তার উৎপাদিত জালি কুমড়ো তুলে আনার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু পানির তোড়ে জালি কুমড়োগুলো ফেলে চলে আসেন। ভিজা কাপড়ে তীরে উঠে আফসোস করতে থাকেন। স্থানীয় এক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অন্যের জমিতে সবজি চাষ করেছিলেন। এখন ফসল পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত আছেন। আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে ওবায়েদের মত অন্য কৃষকরাও স্বপ্নের ফসল বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারেননি।
গোমতীচরের কৃষকদের ক্ষতির বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দিলিপ অধিকারী জানান, গোমতীচরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের সবজি খেত ও বেশ কয়েক হেক্টর বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
এদিকে চর ডুবে পানি বেড়িবাধের কাছে চলে আসায় নদীর ভিতরে বসবাস করা সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। গোমতীর চাঁনপুর,পালপাড়া,গোলাবাড়ী এলাকার পাঁচশতাধিক পরিবার ও বুড়িচং-দেবিদ্বার ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মিলিয়ে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পরে। রাতে পানি বাড়তে থাকলে চরের বাসিন্দারা তাদের ঘরে মালামাল গোমতীর তীরে তুলে আনার চেষ্টা করলেও ভোর রাতে ভারী বর্ষণের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।
তবে কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া কর্মকর্তা মো:ইসমাইল ভূইয়া জানান,দুপুর নাগাদ বৃষ্টি কমে আসবে। আগামী দুই একদিনে বৃষ্টিপাত কমে স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার (পওর) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, আমি নতুন যোগ দিয়েছি। গোমতীর পানি বৃদ্ধিও বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com