হালিম সৈকতঃ কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার বলরামপুর গ্রামের লেয়াকত নামে এক হোমিও চিকিৎসক বিভিন্ন ব্যক্তি, এনজিও ও ব্যাংক থেকে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে। তার বাড়ি তিতাস উপজেলার দক্ষিণ বলরামপুর গ্রামে। বাবার নাম তবদল হোসেন এবং মাতার নাম আম্বিয়া। প্রায় ১০-১৫ দিন যাবৎ সে এলাকা থেকে উধাও হয়েছে প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা ঋণের দায়ে। মাছিমপুর বাজারে সুরুজ মিয়া সুপার মার্কেটে সে হোমিও এন্ড বনাজী চিকিৎসালয় নামে ঔষধ ব্যবসা করত।
আত্মগোপনে থাকা লেয়াকতের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনই বন্ধ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ও পাওনাদাররা হতাশায় পড়ে গেছেন। এই দিকে তার দোকান বন্ধ পাওয়ায় এবং বাড়িতে না থাকায় এলাকায় চাউড় হয়েছে লেয়াকত এখন পলাতক। কোথাও তাকে খুজে পাচ্ছে না কেউ। এলাকায় বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ অন্যান্য মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বেশ কিছু লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় লেয়াকতের লেনদেন এক সময় বেশ ভালই ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন হল কেউ বলতে পারছেন না।
মাছিমপুর আশার আলো সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ অপু বলেন, লেয়াকত আমার সমিতির একজন সদস্য ছিল এবং সমিতি থেকে সে ৬ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে। পরিশোধ করে নাই। সে আমাকে তার দোকানের সব কাগজপত্র এবং ৬ লক্ষ টাকার একটি চেক দিয়েছে। চেক ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর ডিজঅনার হয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করব।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ব্র্যাক ব্যাংকের ৮০ হাজার টাকা, আশা ব্যাংকের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, গ্রামীন ব্যাংকের ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ঐচার চরের লিটনের ২ লক্ষ টাকা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঙ্গাশিয়ার এক মহিলার ২ লক্ষ টাকা, মাছিমপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী রিপনের ১ এক্ষ ৮০ হাজার টাকা, মুদি দোকানদার আবু কালামের ১ লক্ষ টাকা, কাপড়ের ব্যবসায়ী মাঈনুদ্দিন উদয়ের ২ হাজার টাকা এবং মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অনিতা পোদ্দারের ৭২ হাজার টাকাসহ প্রায় অর্থ কোটি টাকা নিয়ে সে লাপাত্তা রয়েছে।
এছাড়াও মানুষের টাকা নিয়ে সে ইসলামিক গানের ক্যাসেট বের করেছে। ইসলামিক চিন্তাবিদ হতে চেয়েছে। এবং ইন্সুরেন্স ব্যবসার সাথেও সে জড়িত ছিল। কেউ কেউ বলেন, মহিলাদের সাথে তার ছিল বেশ সখ্যতা। এলাকাবাসী তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষনা করেছে। তাকে দেখা মাত্র নি¤œ নম্বরে (০১৬১১৮০৫০২১) যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছেন এলঅকাবাসী।
সুরুজ মিয়া মার্কেটের মালিক মোবারক হোসেন সরকার বলেন, আগে তো তাকে এমন দেখি নাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত এবং পড়াতো। কেন যে এমন করলো বলতে পারছি না। তবে কিছু দিন যাবৎ অনেক লোকজন লেয়াকতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে আমার কাছে। আমার মনে হয় ঋণের চাপে সে পালিয়ে গেছে।
মাছিমপুর বাজার কমিটির সভাপতি আঃ বাতেন সরকার রেনু মিয়া বলেন, দেখতে ভদ্রই মনে হয়েছিল। ভদ্রতার আড়ালে মুখোশদারী শয়তান এত দিন পর বুঝা গেল। এত টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল অথচ আমরা কেউ বুঝতেই পারলাম না ? তার উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত। বিগত কয়েক দিন আগে থেকে এই বিষয়টি আমি জানতে পারি।
অভিযুক্ত মো. লেয়াকত আলী বেলালীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে, তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়ির লোকজন কথা বলতে নারাজ।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com