কুবি প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মী। বৃহষ্পতিবার দুুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বেধড়ক মারধরের শিকার ঐ শিক্ষার্থীকে কুমিল্লা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
খোজ নিয়ে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১১ তম ব্যাচের মাঈনুদ্দীন নামে এক শিক্ষার্থীর সাথে একই বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সালমান চৌধুরীর কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সালমান উত্তেজিত হয়ে বিভাগের সিনিয়র মাঈনুদ্দিনের গায়ে হাত তোলেন। ঘটনার সমঝোতার জন্য মাঈনুদ্দিন তার বিভাগের সিনিয়র ৯ম ব্যাচের ইকবাল খানসহ কয়েকজনের কাছে ঘটনা বললে ইকবাল তার বিভাগের জুনিয়র সালমানকে ডেকে এনে ঘটনাটি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। এতে সালমান আরো উত্তেজিত হয়ে সেখান থেকে চলে গিয়ে তার হলের ৮-১০ জন নিয়ে ইকবালকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে বেধড়ক মারধর করে। এতে ইকবাল গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসে। পরে ডাক্তার তাকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন।
মারধরের নেতৃত্ব দেওয়া প্রত্যেকেই শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতাকর্মী। এদের মধ্যে শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আহমেদ আলী বুখারী, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক হিসাব ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মুনতাসির আহমেদ হৃদয়, উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক লোক প্রশাসন বিভাগের মো. এনায়েত উল্লাহ, সদস্য হিসাব ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. মিরাজ খলিফা এবং একই বিভাগের রাফিউল আলম দীপ্তসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ও ১২ তম ব্যাচের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা ছিলেন বলে জানা যায়।
এছাড়াও বুধবার (১৮ জুলাই) বাসে সীট রাখাকে কেন্দ্র করে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলামকে ক্যাম্পাসের প্রধান গেটের কয়েক হাত দূরেই বেধড়ক মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। যাদের মধ্যে অনেকেই বৃহস্পতিবারের মারধরের সঙ্গে জড়িত।
অভিযুক্তদেও মধ্যে আহমেদ আলী বুখারী ও মুনতাসির আহমেদ হৃদয়কে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গত বছরের ২০ডিসেম্বর শাখা ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয় এবং পরবর্তীতে ১০মে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জনান, ‘আমি শুনেছি র্যাগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ জানান, ‘আজকের মারধরের ঘটনাটি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের আভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। তবে বিভাগের শিক্ষকরা এ বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com