হারানো বাবা মা কে ফেরত পেতে চায় কুমিল্লা বরুড়ার মেয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ “সুমাইয়া থেকে শারমিন আমি আজ, কিন্তু কে আমার বাবা? কে আমার মা ? এক নজর দেখতে তাদের খুজতে খুজতে ছুটে চলেছি রাজধানী ঢাকার অলিগলিতে রোজ। আজ থেকে প্রায় ১৫/১৬ বছর আগে আমার বয়স যখন ৩ থেকে সাড়ে তিন বছর হবে। তখন রাজধানী ঢাকার সাত রাস্তা এলাকা থেকে চুরি করে নিয়ে যায় শরিয়ত পুর জেলার ড্যামুডা থানার সিঁদুল কুড়া ইউনিয়নের আদাশন গ্রামের আব্দুল হক সর্দ্দার ও তার স্ত্রী মাহামুদা, বিপুল অর্থের বিনিময় একই এলাকার হায়দার শিকদার ও তার স্ত্রী আসমা বেগম নামের এক নিঃসন্তান দম্পত্তির হাতে তুলে দেয় আমাকে। পরে শুনেছি ছোট বেলায় নিজের নাম সুমাইয়া আর ভাইয়ের নাম রাজু এটুকুই কেবল বলতে পারতাম তখন আমি। নাম বদলে নতুন নাম রাখা হয় শারমিন। যখন আমি বুঝতে শিখি তখন মানুষের মুখে জানতে পারি হায়দার শিকদার ও আসমা বেগম আমার প্রকৃত বাবা মা নয়। তখন কষ্টে বুক ভেসে যায়। জানার খুব আগ্রহ জাগে আমার আসল জন্ম পরিচয় ও নিজের পরিবার কে । পালিত বাবা মার কাছে আমার আসল পরিচয় জানতে চাইলে আমার উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করা হতো। আমার বয়স যখন ১০-১১ হবে নিঃসন্তান হায়দার শিকদার ও আসমা বেগমের কোল জুড়ে একটি সন্তান আসে পৃথিবীতে। আর তখন থেকেই আমার প্রতি নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। আমাকে এতোটাই নির্যাতন করা হতো এলাকার লোকজনও সইতে পারতো না।
আর তাই আমার আসল বাবা মা কে খোঁজার জন্য ঢাকায় চলে এসেছি এবং অজানা পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। তবে যারা আমাকে ঢাকা থেকে শরীয়তপুর নিয়ে গেছে তারা এটুকু বলেছে আমার বাড়ি নাকি কুমিল্লা জেলায়। আর আমারও মনে আছে শুধু কুমিল্লা নামটি। বাবা মগবাজার কোন এক হাসপাতালে কাজ করত মা শ্যামলী তে কোন এক ঔষধ কোম্পানীতে কাজ করত। আমার জীবন থেকে ১৫ বছর হারিয়ে যাওয়ার পর। এক ব্যাক্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম আমার জন্ম দাতা পিতার নাম আব্দুর রহমান। মায়ের নাম মর্জিনা। বরুড়া শোলাপুকুরিয়া গ্রামের। দুঃখের বিষয় তাদের আর বাড়িটা ঐ গায়ে নেই নাকি। তারা সকলে এখন ঢাকায় থাকে। এত বছর পর নিজ পিতৃ পরিচয় পাওয়ার পর ও তাদের বুকে ফেরা হলো না”।
–নিবেদক হতভাগা শারমিন আবেদিন