চান্দিনায় সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার চান্দিনায় সাপের কামড়ে আব্দুল মালেক (৫৫) নামে এক সাপুরের মৃত্যু ঘটেছে। রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ বাড়িতে আনার জন্য ওঝার অপেক্ষায় মশারী বন্দি করে রাখা হয় মরদেহ।
নিহত আব্দুল মালেক ওই গ্রামের বাসিন্দা। সে বেদে সম্প্রদায়ের না হলেও এলাকায় সাপ ধরার ওস্তাদ বলে সবাই জানতো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে গ্রামের এক কৃষক জমিতে মাছ ধরার ফাঁদ (আন্তা) থেকে মাছ আনতে গিয়ে ফাঁদে সাপ ঢুকেছে। ওই সাপটি গোখরা প্রজাতির বিষধর হওয়ায় তারা সাপসহ মাছ ধরার ফাঁদটি সাপুড়ে আব্দুল মালেক এর বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই রাতেই আব্দুল মালেক ফাঁদ থেকে সাপটি ধরে একটি ব্যাগে আটকে রাখে। পরদিন রবিবার সকাল ১০টায় সাপটিকে খাবার খাওয়ানোর জন্য ব্যাগ থেকে বের করার সাথে সাথে সাপটি ওস্তাদ আব্দুল মালেকের হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। এসময় আব্দুল মালেকের স্ত্রী সহ অন্যান্যরা তার হাতে বাঁধ দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসলে তিনি সাপ ধরার ওস্তাদ বিধায় ওই কামড়ে তার কিছুই হবে বলে বিষয়টি উড়িয়ে দেন।
সকাল প্রায় ১১টার পর তিনি নিজ বাড়িতে ঢলে পড়লে তাৎক্ষনিক ভাবে পরিবারের লোকজন তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনে। কিন্তু চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কামড়ের চিকিৎসা না থাকায় তারা কুমিল্লার ময়নামতি সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আব্দুল মালেক।
বিকেলে নিহতের মরদেহ বাড়িতে আনার পর বাড়ির উঠানে মশারী টানিয়ে তাকে নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে পরিবারের সদস্যদের।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শুনেছি সাপে কাটা রোগী না-কি সাত দিন পর্যন্ত দম চেপে থাকে। ভাল ওঝা পাইলে শেষ চেষ্টা করে দেখবো। আমরা চারিদিকে ভাল ওঝার সন্ধান চালাইতেছি।
এব্যাপারে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রাণীর ২-৪ মিনিট হার্টবিট বন্ধ থাকলে তার মৃত্যু ঘটে। আর যেখানে একটি হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছে সেখানে আর কোন কথা থাকতে পারে না। মরদেহটি এভাবে রাখলে কয়েক ঘন্টা পর তার নাক-মুখ-কান দিয়ে পানি বের হবে এবং পেট ফুলে যাবে। ২৪ ঘন্টা পর পচন সৃষ্টি হবে।