ডেস্ক রিপোর্টঃ 'মোটরসাইকেলে বসেই মাথায় গুলি চালায় রেজাউল। এরপর চালকসহ দ্রুত পালিয়ে যায় সে। রেজাউল কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সাত্তারের লোক'- এমনই অভিযোগ সোমবার রাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যদের।
নিহত দেলোয়ার, কাউন্সিলর সাত্তার ও সন্ত্রাসী রেজাউল একই এলাকার বাসিন্দা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনকে ঘিরে কাউন্সিলর প্রার্থিতা নিয়ে দেলোয়ার ও সাত্তারের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য হয়। দেলোয়ার আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আব্দুস সাত্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। দু'জনই একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
এদিকে নিহত দেলোয়ারের সঙ্গে ওঠাবসা করা একাধিক দলীয় নেতা ও কর্মী জানিয়েছেন, সিটি নির্বাচনের সময় থেকেই রেজাউল তাকে হত্যা করতে পারে- এমন কথা প্রকাশ্যে বলে বেড়াতেন দেলোয়ার। এমনকি মৃত্যুর দু'দিন আগেও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রেজাউলের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি ও সদর দক্ষিণ থানায় দুটি হত্যা, চাঁদাবাজি, মারামারি, মাদক, ডাকাতি প্রস্তুতির ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সে পুলিশের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক চোরাকারবারি। সম্প্রতি সদর দক্ষিণ থানার গণধর্ষণের একটি মামলার পর সে গা ঢাকা দেয়। স্থানীয়রা জানায়, নিজ এলাকা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের শামবকশি বল্লভপুরের পাশের সীমান্ত একবালিয়া দিয়ে সে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করে। অপরাধ ঘটানোর পর সে ভারতে পালিয়ে যায়। সেখান থেকেই চোরাকারবার পরিচালনা করে। সুযোগ বুঝে আবার বাংলাদেশে আসে।
পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম ঘটনার পর পরই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'দেলোয়ারের সঙ্গে থাকা ৫/৬ জন মোটামুটি ধারণা দিতে পেরেছে, খুনি কারা হতে পারে। আশা করছি, প্রকৃত অপরাধীকে ধরে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করব।'
এদিকে এই হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই মো.শাহাদাত হোসেন নয়ন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় শামবক্সি (ভল্লবপুর) গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল করিম (৩৫) ও আবুল কালামের ছেলে কাউছার (২৮) সহ অজ্ঞাতনামা একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ওসি মো. মামুন-অর রশিদ বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে কৌশলগত কারণে পুলিশ মঙ্গলবার মামলার বিষয় গোপন রাখেন।
তিনি বলেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিভিন্নজনের সঙ্গে দেলোয়ারের মনোমানিল্য ও বিরোধ ছিল বলে তিনি মামলায় উল্লেখ করেন। সহকর্মী ও এলাকাবাসীরও ধারণা এসব বিরোধের জের ধরে দেলোয়ার খুন করা হয়েছে।
সূত্রঃ সমকাল/ঢাকাটাইমস
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com