কুমিল্লায় স্ত্রীকে খুন করে পালিয়েছে স্বামী

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা মহানগরীর শাকতলায় স্ত্রী নাসিমা আক্তার কে হত্যার পর শিশু সন্তান নিয়ে পালিয়েছে স্বামী মেহেদী হাসান। খবর পেয়ে সোমবার রাত ৯টায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনুমান ১৫ বছর পূর্বে নোয়াখালী জেলার চাটখীল উপজেলার জায়েকবাজার এলাকার প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সাথে বিয়ে হয় লালমাই উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের মগের কলমিয়া গ্রামের আলী হোসেনের কন্যা নাসিমা আক্তারের। তাদের সংসারে নাইমুর রহমান অনি নামে এক ছেলে রয়েছে। কিছুদিন পর প্রবাসে কারাদন্ডিত স্বামী কে তালাক দিয়ে নাসিমা আক্তার আপন দেবর প্রবাস ফেরত শহীদ উল্যাহ কে বিয়ে করে। এ সংসারেও নাজিমুর রহমান অমি নামে এক ছেলে রয়েছে। শহীদ উল্যাহ স্ত্রী-সন্তানের সুখ শান্তির কথা বিবেচনা করে নাসিমা আক্তারের নামে ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট ও কুমিল্লা শাকতলায় সাড়ে তিন শতক জমি ক্রয় করে একটি টিনসেট বাড়ী নির্মাণ করে দেন। কিন্তু সাড়ে ৩বছর আগে শহীদ উল্যাহ কে তালাক দিয়ে বরুড়া বাজারস্থ মেহেদী ফ্যাশনের মালিক স্থানীয় আগানগর গ্রামের মেহেদী হাসান কে ৩০ লক্ষ টাকা মোহরনায় বিয়ে করে নাসিমা আক্তার। বিয়ের ২/৩ মাসের মাথায় তাদের দাম্পত্যেও কলহ দেখা দেয়। একপর্যায়ে নাসিমার দায়েরকৃত মামলায় মেহেদী গ্রেফতার হয়। এরপর দুই পরিবারের হস্তেক্ষেপে আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে মেহেদীর জামিন হয়। শাকতলার বাড়ীতে শুরু হয় তাদের নতুন দাম্পত্য। এ সংসারে সালমান জাহিদ ত্বকী নামে দেড় বছরের একজন শিশু আছে। অনি মায়ের বাসায় থেকে শাকতলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে অধ্যায়ন করছে। অমি নোয়াখালীর পিতার বাড়ীতে থাকে। ত্বকী মা বাবার সাথে থাকত। সোমবার দুপুর ২টায় স্কুল থেকে ফিরে এসে অনি দেখতে পায় বাড়ীতে তালা ঝুলছে। মা-বাবার মোবাইল বন্ধ। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর সন্ধ্যায় অনি বাড়ীর দেয়াল টপকে খোলা জানালা দিয়ে আলমারির তালায় ঝুলানো গেইটের চাবি নেয়। এরপর গেইটের তালা খোলে ভিতরে গিয়ে দেখে মায়ের মৃত দেহ কম্বলে মোড়ানো। ত্বকী ও মেহেদী হাসান নেই। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন অর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর রাত ৯টায় ইপিজেড পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ আজিজুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন।

নিহতের পিতা আলী হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা এসে দেখি বাড়ীর দক্ষিণ-পূর্ব কক্ষের বক্স খাটে নাসিমা আক্তারের লাশ কম্বল দিয়ে মোড়ানো। তার মাথা পূর্ব দিকে এবং পা পশ্চিম দিকে ফিরানো। তার গলায় তার দিয়ে পেছানোর চিহৃ রয়েছে। মেহেদীর ছোট ভাই তুপা ফোন করে বলেছেন ত্বকীকে কেউ একজন বাড়ীতে পৌছে দিয়েছেন।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন অর রশিদ পিপিএম বলেন, নিহতের গলায় দাগ রয়েছে। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আরো পড়ুন