জে এইচ বাবুঃ কুমিল্লা-বুড়িচং-ব্রাহ্মনপাড়া-মিরপুর এমএ গনি সড়কে সন্ধ্যার হলেই সিএনজি ভাড়া দ্বিগুনের গুনতে হয় যাত্রীদের। এমনিতে রোদ বৃষ্টি-ঝড়-তুফান কুয়াশা এ কারনে তো ভাড়া বেড়ে যাওয়া নিত্য দিনের রেওয়াজ। তবে বছরজুড়ে একটা প্রথা চালু করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকরা। তা হলো সন্ধ্যা হলেই ভাড়া বেশি বৃদ্ধি করে ফেলে সিএনজি মালিক ও চালক সমিতির লোকজন। এসময় ভাড়া বেশি দিয়ে যাত্রীদের চলাচল করতে এক প্রকার বাধ্য করে সিএনজির চালকেরা। সন্ধ্যার পর বিকল্প যানবাহন না থাকায় যাত্রীদের দিতে হয় দ্বিগুন ভাড়া। আর চালকদেও পছন্দমতো ভাড়া না হলে একচুল পরিমান নড়বেন না। প্রয়োজনে রাত গড়িয়ে সকাল হবে তবুও তারা পছন্দসই ভাড়া না হলে বাহনে চাবি স্পর্শ করাবেন না। এ নিয়ে সড়কটি চলাচলরত হাজারো সাধারণ যাত্রীর অভিযোগ থাকলেও বিষয়টির প্রতি কর্ণপাত করেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লা শাসনগাছা সিএনজি স্ট্যান্ডে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় যে, কুমিল্লা-বুড়িচং-ব্রাহ্মন-মিরপুর এমএ গনি সড়কে বিকাল ৫টার পর থেকে সিএনজি ভাড়া বাড়িয়ে ফেলে চালকরা। কুমিল্লা থেকে বুড়িচং ভাড়া ২০ টাকার স্থলে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তা ৫০ টাকা করে নেয়া হয়। কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মনপাড়া ভাড়া ৩০ টাকা স্থলে ৫০ এবং সন্ধ্যার পরে ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। এতে করে সিএনজির চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে সাধারন যাত্রীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিএনজি ভাড়াও বাড়তে থাকে। কুমিল্লা থেকে বুড়িচংয়ের দুরত্ব হলো মাত্র ১২ কিলোমিটার। আর এই স্থানের মধ্যে সিএনজির চালকরা সিন্ডিকের মাধ্যমেই ভাড়া বৃদ্ধি করে থাকে। তারা সন্ধ্যার পর থেকে ভাড়া বেশি দিতে চাপ প্রয়োগ করেন যাত্রীদের উপর। সিএনজি ব্যাতিত অন্য কোন পরিবহন না থাকায় যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় সিএনজির চালকেরা যাত্রীদের উপর বেশি ভাড়া আদায় করছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা থেকে বুড়িচংয়ে সিএনজি যোগে আসার জন্য রফিক নামে এক যাত্রী জানান, সন্ধ্যা হলেই ২০ টাকার ভাড়া দিতে হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ভাড়া দেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি বাংলাদেশে আর কোন সড়কে এত বেশী ভাড়া আদায় করা হয় না,যা শাসনগাছা থেকে বুড়িচং-ব্রাহ্মনপাড়া টু মিরপুর সড়কে দিতে হয়।
সন্ধ্যার পরে শাসনগাছা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পালপাড়া, পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালখড়পাড় এবং ছয় কিলোমিটার ভরাসার বাজারে যেতে হলে ৩০ টাকা ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের।
সেনা সদস্য রাশেদুল ইসলাম জানান, আমি সপ্তাহে ৩/৪ বার বুড়িচং-কুমিল্লা যাওয়া আসা করি, মাগরিবের আজানের পরেই ৫০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হয়। শুক্রবারে বিকেলে বুড়িচং থেকে কুমিল্লা ৪০/৫০টাকা। এনজিও কর্মকতা রফিকুল ইসলাম জানান, ৭ টার আগে থেকেই ভাড়া বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান মোবাইল ফোনে জানান, ভাড়া বেশি নেয়ার অভিযোগে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে চালকদের জরিমানা করেছি। বর্তমানে আবারো অভিযোগ পেয়েছি নিশ্চয়ই যাত্রীদের দূর্ভোগ কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে যাত্রী সেজে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চালকরা বলেন, প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়। এটাই সিস্টেম। আপনারা গেলে যান না, নাইলে অন্য চিন্তা করেন।
এদিকে শাসনগাছা সিএনজি স্ট্যান্ডে বিভিন্ন স্টপেজে কত টাকা ভাড়া দিতে হবে এমন একটি তালিকা সম্বলিত সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় প্রশাসন। তবে তা শুধু লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ যদি চালকরা সাইনবোর্ডটিকে অনুসরণ করতো তাহলে সন্ধ্যার পরে যাত্রীদের দ্বিগুনের বেশী ভাড়া গুনতে হত না। তবে সম্প্রতি সাইনবোর্ডটি আর চোখে পড়ে না।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com