লাকসাম হতে অপহৃত কিশোরীকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার ৪
লাকসাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতাঃ লাকসাম থেকে অপহৃত এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে র্যাব। বুধবার চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় একটি আস্তানা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধারসহ চার অপহরণ ও ধর্ষনকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো ফেনী সদরের নোয়াবাদ এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে এয়াকুব আলী মিন্টু ওরফে মিলন (৩১), তার স্ত্রী মোছাঃ জেসমিন (২৪), বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার আফাজ উদ্দিনের মেয়ে আফরোজা আক্তার আশা ওরফে সুমি, এবং মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মোঃ আঃ মোমিন (৩০)। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্র“য়ারী অপহৃত ভিকটিমের মা অপহরনের বর্ননা দিয়ে র্যাব-১১ সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে এসে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ প্রাপ্তির সাথে সাথে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন যে মোবাইল নাম্বার গুলো থেকে কল করে মুক্তিপণ দাবী করা হয়েছে তার অবস্থান নিশ্চিত করে ১৩মার্চ চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় একটি আস্তানা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয় এবং চার অপহরণ ও ধর্ষনকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
অপহৃত ভিকটিমের মায়ের লিখিত অভিযোগে এবং গ্রেফতারকৃতরা র্যাবের প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদে জানায়, ইয়াকুব আলী মিন্টু ওরফে মিলন কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম থেকে এসে লাকসামে ভিকটিমের পাশের বাসায় একটি রুম ভাড়া নেয়। সেখানে মিন্টু, তার স্ত্রী (জেসমিন) ও তার মাকে নিয়ে বাসা ভাড়া নেওয়ার কিছুদিন পর থেকেই মিন্টু ও তার স্ত্রী ভিকটিমকে টার্গেট করে এবং তার সাথে সুসম্পর্ক তৈরীর প্রয়াস চালায়। ভিকটিম চ ল প্রকৃতির একটি মেয়ে হওয়ায় সে অপহরণকারীদের আপ্যায়নে মুগ্ধ হয়ে যায় এবং অপহরণকারী দম্পতির সাথে তার সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে মিন্টু চট্টগ্রামে অবস্থানরত তার সহযোগী মোঃ এয়াছিন মিয়া, এয়াছিনের কথিত স্ত্রী আফরোজা আক্তার আশা ওরফে সুমি ও মোঃ আব্দুল মোমিনদের ফোন দিয়ে ভিকটিমের কথা জানায় এবং তাকে কিডন্যাপ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি চায়। সবার অনুমতি পেয়ে মিন্টু ও জেসমিন ভিকটিমকে কিডন্যাপ করার পরিকল্পনা করে।
তারই প্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্র“য়ারী জেসমিন ভিকটিমকে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় এবং বলে সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসবে। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে মিন্টু ও জেসমিনের সাথে যায়। এক পর্যায়ে কৌশলে ভিকটিমকে নেশা জাতীয় পানীয় পান করায় এবং লাকসাম ষ্টেশন থেকে ট্রেনে উঠিয়ে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়। এরপর কিডন্যাপাররা ভিকটিমের মায়ের নম্বরে ফোন করে মুক্তিপণ দাবী করে। কিডন্যাপাররা এক পর্যায়ে ভিকটিমকে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। তার মতের বিরুদ্ধে কাস্টমারদের সাথে অনৈতিক কাজ করতে চাপ দিতে থাকে। ভিকটিম রাজি না হওয়ায় তাকে চরম নির্যাতন করা হয় এবং জোরপূর্বক ইয়াবা সেবন করিয়ে নিজেরা ধর্ষণ করে ও কাস্টমারদের দিয়ে ধর্ষণ করায়।
অপহরনের ঘটনার পর ভিকটিমের মা বাদী হয়ে কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার মামলা নং-০৭ তারিখ ১৩/০৩/২০১৯ ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৭/৮/৩০ রুজু হয়।