ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা উপজেলা নির্বাচনে ১৩ প্রার্থীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী, বিস্ফোরক, মারামারি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীরা হলফনামায় নিজেরাই ওই তথ্য উপস্থাপন করেছেন বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে। আগামী ৩১শে মার্চ ওই তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।
ওই হলফনামা থেকে জানা যায়- মুরাদনগর, হোমনা, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা ও বুড়িচং উপজেলার ৫ চেয়ারম্যান ও ৮ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুইটি, মারামারির ঘটনায় একটি ও ২০১৮ সালে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলাসহ মোট ৫টি মামলা বিচারাধীন। তিনি কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। মুরাদনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আহসানুল আলম কিশোরের বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে।
ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে চান্দিনা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জহিরুল ইসলাম মুন্সীর বিরুদ্ধে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মারামারিসহ দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। মুরাদনগর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ সহ জননিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। একই উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান হেলালের বিরুদ্ধে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে দন্ডবিধির ৩৩২ ধারায় একটি মামলা চলমান। একই উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব মুন্সীর বিরুদ্ধে এন আই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় একটি মামলা রয়েছে। বুড়িচং উপজেলার স্বতন্ত্র ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের বিরুদ্ধে মারামারি ও ৩০২ ধারায় একটি মামলা কুমিল্লার ২নং আমলি আদালতে বিচারাধীন।
এদিকে হলফনামার ৩(খ) অংশে অতীতে দায়ের করা ফৌজদারি মামলার বিবরণে প্রার্থীরা নিজেরাই তাঁদের মামলার তথ্য উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে চান্দিনা উপজেলার আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন বক্সীর বিরুদ্ধে অতীতে একটি ও বিদ্রোহী প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও হত্যার উদ্দেশ্যে জখমের দুটি মামলা রয়েছে।
হোমনা উপজেলার স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শহীদ উল্লাহর বিরুদ্ধে অতীতে সাতটি মামলা ছিল। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুস ছোবহান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অতীতে তিনটি মামলা ছিল।
চান্দিনা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী ফয়সল বারীর বিরুদ্ধে অতীতে একটি মামলা ছিল। মুরাদনগরের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজিব মুন্সীর বিরুদ্ধে অতীতে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ দুটি মামলা ছিল।
জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আছে, তাঁদের বেছে নেবেন দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটাররা। হলফনামায় প্রার্থীরা তাঁদের মামলার তথ্য নিজেরাই জানিয়েছেন। সচেতন ভোটারেরা নিশ্চয়ই সেগুলো বিবেচনা করবেন।
কুমিল্লার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ৪ঠা মার্চ মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিন ছিল। এতে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা দেন। এতে ফৌজদারি মামলার বর্তমান ও অতীতের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com